সরকারের সিদ্ধান্তের পরই জানা যাবে ফাঁসি কোন কারাগারে কাশিমপুর ও কেরানীগঞ্জে ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত
বিপ্লব বিশ্বাস: কোন কারাগারে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হবে- এ ব্যাপারে কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য না দিলেও তিনি বলেছেন, প্রাণভিক্ষার বিষয়ে ‘রিজনেবল কিছু সময়’ পাচ্ছেন তিনি। গতকাল বুধবার বিকালে পুরান ঢাকায় কারা অধিদফতরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
আইজি প্রিজন বলেন, মীর কাসেম আলীকে গতকাল সকাল সাড়ে ৭টায় রায়ের কপি পড়ে শোনানো হয়েছে। তারপর তার কাছে প্রাণভিক্ষার বিষয়টি জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি কিছু সময় চেয়েছেন, বলেছেন চিন্তা-ভাবনা করে জানাবেন। আমরাও তাকে কিছু ‘রিজনেবল সময়’ দিচ্ছি। তাহলে তিনি কত সময় পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, পরিস্থিতিই বলে দেবে তিনি কতক্ষণ সময় পাচ্ছেন। তবে আইন অনুসারে এটা সর্বোচ্চ ৭ দিন হতে পারে। কাসেম আলীর মৃত্যুদ- কার্যকর কোথায় হবে- সে বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আইজি প্রিজন জানান, আলোচনা সাপেক্ষে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
২০১৩ সালে আব্দুল কাদের মোল্লা থেকে শুরু করে দ-িত সবাইকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে এনে নাজিমউদ্দিন সড়কের কারাগারের ফাঁসিকাষ্ঠে নেওয়া হয়েছিল। বহু পুরনো সেই কারাগার সম্প্রতি সরে গেছে রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জে, আর এর মধ্যেই আরেক যুদ্ধাপরাধী মীর কাসেম আলীর আইনি লড়াইয়ের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়েছে। মৃত্যুদ- কার্যকরের প্রক্রিয়া এখন শুরু করতে বাধা নেই।
সেক্ষেত্রে মীর কাসেমের মৃত্যুদ- কার্যকর কি কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে, না কি কাশিমপুর কারাগারে হবে, সে প্রশ্ন উঠেছে অনেকের মধ্যে। উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, এ যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কোথায় কার্যকর করা হবে, সরকারের সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।
তবে উভয় কারাগারের কর্মকর্তারাই বলছেন, সিদ্ধান্ত যাই হোক, তাদের প্রস্তুতি রয়েছে। কেরানীগঞ্জে হোক আর কাশিমপুরে হোক, দুটি ক্ষেত্রেই মীর কাসেম হবেন প্রথম যুদ্ধাপরাধী, যার কারাদ- নতুন কোনো কারাগারে হচ্ছে। ষাটোর্ধ্ব মীর কাসেম এখন রয়েছেন সুরক্ষিত কাশিমপুর কারাগারে।
তবে কাশিমপুর কারাগারের কারা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে তাদের ফাঁসিকাষ্ঠে দ- কার্যকরের প্রস্তুতি শুরু করেছেন। রিভিউ রায় কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছার পর কাশিমপুরের কারারক্ষক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘ফাঁসি কার্যকর করতে যা করা প্রয়োজন, সে ব্যাপারে আমাদের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষ বলার পর বাকি কাজ সারব।’ ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জ্যেষ্ঠ কারা তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আগের পাঁচটি দ- কার্যকরে তদারকির ভূমিকা ছিল জাহাঙ্গীর কবিরের, তবে এখন তার কারাগারই চলে গেছে কেরানীগঞ্জে। জাহাঙ্গীর কবীর বলেন, ফাঁসি কার্যকরের প্রস্তুতি তাদেরও রয়েছে। এখন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা। সম্পাদনা: মোরশেদ