আমরা কি প্রকৃত মুসলিম হতে পারছি?
মাওলানা আবদুল্লাহ যোবায়ের
মুসলিম শব্দটি সালাম শব্দ থেকে উৎপত্তি যার শাব্দিক অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তা বিধান করা। মুসলিম শব্দের অর্থ আতœসর্মপনকারী। পারিভাষিক অর্থে, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে মহান প্রতিপালক হিসেবে গ্রহণ করবে, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না এবং রাসুলুল্লাহ সা. এর নির্দেশিত পথে নিজের জীবন চালাবে, হালাল কে হালাল বলে মানবে এবং হারামকে বয়কট করবে, সালাত প্রতিষ্ঠা করবে, রোজা রাখবে, নিসাবের অধিকারী হলে জাকাত আদায় করবে এবং হজে গমন করবে। এইসব গুণাবলির অধিকারী হলে তাকে মুসলিম বলা হয়।
পবিত্র কুরান থেকে বিষদ জানি, সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসুলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আতœীয়-স্বজন, এতিম-মিসকিন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করে, জাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেজগার।
কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘মুমিনগণ সফলকাম হয়ে গেছে, যারা নিজেদের নামাজে বিনয়-নম্র; যারা অনর্থক কথা-বার্তায় নির্লিপ্ত, যারা জাকাত দান করে থাকে এবং যারা নিজেদের যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। ২৩: ২-৬
হাদিস থেকে ব্যখ্যা: আবদুল্লাহ ইবন মুহাম্মদ জুফী র. আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করিম সা. ইরশাদ করেন ঈমানের শাখা রয়েছে ষাটের কিছু বেশি। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা। সহিহ বুখারি: ৮। প্রকৃত মুসলিম সে-ই যার হাত ও জিহবা থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। সহিহ বুখারি: ৯
এখানে হাত থেকে নিরাপদ বলতে কারো উপর আক্রমন করবেনা এবং জিহবা থেকে নিরাপদ বলতে কারো নামে কুৎসা গিবত মিথ্যা অপবাদ এবং অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ফল ফলাদি গ্রাস না করা বুঝানো হয়েছে।
আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্নিত, নবি করিম সা. ইরশাদ করেন, তিনটি গুণ যার মধ্য থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১. আল্লাহ ও তার রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. কাউকে খালিস আল্লাহর জন্যই মুহব্বত করা। ৩. কূফরিতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপসন্দ করা। সহিহ বুখারি: ১৫
লেখক: আলেম ও গণমাধ্যমকর্মী