ফাঁসির দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন ভারতে পালাতে চেয়েছিল ওবায়দুল
সুজন কৈরী : উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশার খুনি ওবায়দুল খানের ভারত পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত ছিল। তবে এর আগেই তিনি ধরা পড়েন পুলিশের কাছে। গত বুধবার ভোরে নীলফামারী থেকে গ্রেফতারের পর ঢাকায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য জানতে পেরেছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রিশাকে ছুরিকাঘাতে হত্যার কথাও স্বীকার করেছে ওবায়দুল।
এদিকে, খুনি ওবায়দুল খানের ফাঁসির দাবিতে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে মানববন্ধন করেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও রিশার সহপাঠীরা। এতে রিশাসহ অন্য শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরাও অংশ নেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের রমনা জোনের এডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওবায়দুল জানিয়েছে, রিশাকে সে পছন্দ করতো। ওবায়দুলের দাবি রিশাও তাকে পছন্দ করতো। তার বক্তব্য অনুযায়ী, পছন্দ কিংবা প্রেমের বিষয়টি ছিল প্রাথমিক অবস্থায়। দীর্ঘদিন রিশার পেছনে সে ঘুরলেও সম্পর্কের কোনো উন্নতি ঘটেনি এবং রিশার কাছ থেকে কোনো সাড়াও পায়নি। এর ফলে একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে ওবায়দুল। ওই সময় তার সঙ্গে অন্য কেউ ছিল না বলে জানিয়েছে ওবায়দুল।
তিনি আরও জানান, সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওবায়দুলের। তবে পুলিশ তার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, অধিকতর তদন্ত ও আরও কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আছে কি-না এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যের জন্য ওবায়দুলকে আদালতের মাধ্যমে ছয় দিনের রিমান্ডে আনা হয়েছে।
এদিকে, রিশার হত্যাকারী ওবায়দুল খানের ফাঁসির দাবিতে গতকাল বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাঠে ও প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ সময় রিশার ঘাতক ওবায়দুলের দ্রুত বিচার করে ফাঁসিতে ঝোলানোর দাবি জানান তারা।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ওবায়দুলের মতো কোনো বখাটে যেন কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট না করতে পারে। এভাবে যেন আর কারও জীবন চলে না যায়। ওবায়দুলের ফাঁসি দিয়ে সরকার এই দৃষ্টান্ত রাখবেন। এছাড়া ওবায়দুলকে গ্রেফতার করায় পুলিশ প্রসাশনসহ সাধারণ মানুষকে তারা ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
রেহানা আক্তার শিল্পী নামের এক অভিভাবক বলেন, আর যেন রিশার মত কাউকে অকালে জীবন হারাতে না হয়। আমরা রিশার ঘাতকের ফাঁসি দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাসির বলেন, আমরা দ্রুত ওবায়দুলের ফাঁসি চাই। আজ শুক্রবার দেশের সব মসজিদের জুম্মার নামাজ শেষে রিশার জন্য দোয়া মাহফিল হবে। এছাড়া আগামীকাল কলেজের সবাই রিশার কবর জিয়ারত করতে যাবে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ আগস্ট দুপুরে কাকরাইল ফুটওভার ব্রিজে ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত করে রিশাকে। পরে ঢামেক হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হলে চারদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৮ আগস্ট রিশার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে রিশা পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দীতে বলেছে, ওই দর্জি ওবায়দুলই ছুরিকাঘাত করেছে তাকে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি