‘সীমান্ত ব্যাংক’ বিজিবিকে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালনায় বিজিবি সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের কল্যাণে সীমান্ত ব্যাংক নামে একটি তফসিলি ব্যাংকের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিজিবি সদর দফতর পিলখানার ফজলুর রহমান খন্দকার মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে পবিত্র ঈদুল আযহা। তার আগে সীমান্ত ব্যাংক উদ্বোধন করলাম। এটা বিজিবির জন্য ঈদের শুভেচ্ছা। তিনি জানান, এই ব্যাংকে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী মানুষের কর্মসংস্থান ও জনকল্যাণ সম্ভব হবে। এছাড়া ব্যাংকে নিয়োগের ক্ষেত্রে বিজিবির সদস্য ও সাবেক সদস্যদের সন্তানদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী বিজিবির অবদানের কথা তুলে ধরে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অসাধারণ ভূমিকা রয়েছে। ঠিক যে মুহূর্তে নিরস্ত্র বাঙালির উপর হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদাররা ঠিক সেই মুহূর্তে জাতির পিতার স্বাধীনতার ঘোষণায় আমাদের সীমান্তরক্ষীরা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মুক্তিযুদ্ধে আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর অসংখ্য যোদ্ধা শহীদ হয়েছেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক বেদনাদায়ক ঘটনায় আমাদের এ বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা শহীদ হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বিজিবিকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন- ২০১০ পাস করেছি। এতে এ বাহিনী আরও শক্তিশালী ও গতিশীল হয়েছে। নারীরা কোনো ক্ষেত্রে এখন পিছিয়ে নেই। বিজিবিতেও নারী সদস্য অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯৭ নারী সদস্য বিজিবিতে যোগ দিয়েছে এবং আরও ১০০ নারী সদস্য প্রশিক্ষণে রয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশের দারিদ্র্যতা ছিল ৫৭ ভাগ, সেটা এখন ২২ ভাগে নামিয়ে আনতে পেরেছি। ইতোমধ্যে ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে আনতে পেরেছি। প্রবৃদ্ধি অর্জনে আমরা বিশ্বে ৫ নম্বরে রয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমের পদক্ষেপও তুলে ধরে বলেন, প্রযুক্তি আমাদের আরও দ্রুত উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের সম্পদের হয়তো সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু তা যদি সঠিকভাবে পরিকল্পনা মতো ব্যবহার করা যায়, তবে আমরা আরও এগিয়ে যেতে পারবো।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হতে পারে, তারা যেন বিপথে চলে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকা- চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ও আর্থিক বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান, বিজিবির মহাপরিচালক ও সীমান্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, সীমান্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোখলেসুর রহমান। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি