কনডেম সেলে অঝোর ধারায় কাঁদছেন মীর কাসেম প্রাণভিক্ষার জন্য আরও সময় চান, সরকারের ‘না’
আজাদ হোসেন সুমন ও মাসুদ আলম: অঝোর ধারায় কাঁদছেন মীর কাসেম আলী। গত পরশু রায় পড়ে শোনানোর পর থেকে তার এ কান্না শুরু হয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কয়েক দফা অঝোরে কেঁদেছেন। প্রতক্ষ্যদর্শী জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি প্রাণভিক্ষা চাওয়ার জন্য সময় চেয়ে বলছেন, তার ছেলেকে ফেরত পেলে তার সঙ্গে পরামর্শ করে প্রাণভিক্ষার আবেদনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, এখন যা হবে সবই আইন ও জেলকোড অনুযায়ী হবে। কাউকে বিশেষ কনসিডার করার সুযোগ নেই। মীর কাসেম আলীর সামনে এখন একটি পথ খোলা আছে আর সেটি হচ্ছে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাওয়া। এ ব্যাপারেও আইনে স্পষ্ট আছে, তার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাকে সর্বোচ্চ ৭ দিন সময় দেওয়া যেতে পারে এর বেশি নয়।
কারা সূত্র জানায়, কাসিমপুর কারাগার পার্ট ২-তে মীর কাসেমের ফাঁসি কার্যকরের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে সেখানেই তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে। সূত্রটির দাবি কাসিমপুর ২ কারা কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও তারা ভিতরে ভিতরে আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
সূত্রটি আরও জানায়, বুধবার সকালে মৃত্যুর রায় শুনে কেঁদেছিলেন। পরে কারা কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বিকালে পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে তার চোখ বেয়ে জল পড়তে দেখা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবারও কয়েকবার কেঁদেছেন এবং ফ্যালফ্যাল চোখে জানা আশঙ্কায় তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
গতকাল সকাল থেকে গণমাধ্যম কর্মীরা কাশিমপুর কারা ফটকের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। কর্তৃপক্ষ কারা অভ্যন্তরে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে। এছাড়া কারাগারের বাইরে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিও লক্ষণীয়।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪৮ মিনিটে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মীর কাসেম আলীর রিভিউ খারিজ সংক্রান্ত রায়ের কপি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ পৌঁছে। তবে রাত বেশি হওয়ায় তাকে পরদিন বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় আনুষ্ঠানিকভাবে তা পড়ে শোনানো হয়।
৬৩ বছর বয়সী মীর কাসেম গ্রেফতারের পর ২০১২ সাল থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে বন্দী। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দীর মর্যাদায় ছিলেন। ফাঁসির দ-প্রাপ্ত হওয়ার পর তাকে কনডেম সেলে পাঠানো হয়। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম