অধ্যাপক এম শাহীদুজ্জামান
বিএনপি প্রতিষ্ঠার তিন যুগেরও বেশি সময় হয়েছে। এই সময়ে বিএনপিকে অনেক ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। নানা প্রতিকূলতা পার করতে হয়েছে। তারপরও দলটি এগিয়ে গেছে সামনের দিকে। দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় কাজ করেছে, গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন সময় আন্দোলনসংগ্রাম করেছে। এই সময়ে তাদের সফলতা যেমন রয়েছে, ব্যর্থতাও রয়েছে। তার মধ্যে রাজনৈতিক ব্যর্থতা উল্লেখযোগ্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাটা ছিল বিএনপির একটি বড় ধরনের ভুল। সেই নির্বাচনে যদি বিএনপি অংশগ্রহণ করত তাহলে বিরোধিদল হিসেবে সংসদে থাকত। জনগণের স্বার্থবিরোধী সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে পারত, গঠনমূলক সমালোচনা করতে পারতÑ এতে জনগণের স্বার্থসংরক্ষণ হতো। নির্বাচনের সময় সুনির্দিষ্ট কোনো নীতি অবলম্বন না করে বিভিন্ন ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বেশিরভাগ নেতাকর্মী প্রায়শ্চ জেলে থাকে, কখন কে বের হয়, কে জেলে যায় তা বোঝা কঠিন। তাতে রাজপথের আন্দোলনও জোরদার করতে সমস্যা হয়।
বিএনপিকে এখন প্রথম থেকেই শুরু করা উচিত। দেশের নানা সংকট, সমস্যা নিয়ে টেলিভিশনে দলের নেতারা কথা বলেন। এসব কথা বিরোধী দলে থেকেও যদি বলা যেত তাহলে অনেক বেশি কার্যকর হতো। জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারলে জনগণ তাদের পক্ষেই থাকত। এখন যা অবস্থা, তাতে একথা বলা যায় নাÑ মানুষ তাদের ওপর আস্থাশীল। মানুষের আস্থা অর্জনে তাদের ব্যর্থতা রয়েছে। এসব ব্যর্থতার কারণেই রাজনীতিতে বিএনপি এখন অনেকটা দুর্বল। তাদের বিপুল পরিমাণ সমর্থক থাকলেও দলে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। যার প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছেÑ আন্দোলন-সংগ্রামে। বিএনপির বিদেশি বন্ধু নেই বললেই চলে। তাদের বিদেশি সহযোগি রাষ্ট্র খুবই সীমিত। সম্প্রতি জন কেরি ঢাকায় আসার পর বিএনপি নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু সমর্থনটা আওয়ামী লীগকেই একরকম দিয়েছে গেছেন বলেই মনে হচ্ছে।
পরিচিতি : রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ : শরিফুল ইসলাম
সম্পাদনা : আশিক রহমান