মারজানের তথ্যেই হলি আর্টিজানে হামলা চালায় তামিম পাঁচ তারকা হোটেলে হামলার টার্গেট ছিল জঙ্গিদের
বিপ্লব বিশ্বাস: গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার আগে একাধিক রেস্টুরেন্ট ও একটি পাঁচ তারকা হোটেলে বড় ধরনের হামলার টার্গেট করেছিল জঙ্গিরা। দীর্ঘ দুমাস হলি আর্টিজানে হামলার তদন্ত করতে গিয়ে এ চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া পাঁচ জঙ্গি ছাড়াও বাইরে থেকে কারা কি ভূমিকায় থেকে হামলায় সহযোগিতা করেছে তাদের বিষয়ে তথ্যও পেয়েছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিটের তদন্ত কর্মকর্তারা।
ইউনিটের একটি সূত্র জানিয়েছে, নব্য জেএমবির সামারিক শাখার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরীর ডান হাত হিসেবে কাজ করত মারজান। এ মারজানই তামিমকে গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের লেকপাড়ের নির্জন হলি আর্টিজান বেকারির সন্ধান দেয়। কয়েক দফা রেকির পর মারজান জানায়, হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ধ্যার সময় ৩০ থেকে ৩৫ জন বিদেশি অবস্থান করে। পরবর্তীতে মারজানের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই হলি আর্টিজানে হামলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে তামিম চৌধুরী।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছেন, তামিম চৌধুরীর পর নব্যধারার জেএমবির গুরুত্বপূর্ণ নেতা হলো মারজান। মারজানের প্রতি অধিক নিভর্রতা ছিল তামিমের। মারজানকে গ্রেফতার করতে পারলেই নব্য জেএমবির আরও কিছু তথ্য জানা যাবে। একই সঙ্গে নব্য জেএমবির কাজকর্মেও কিছুটা ভাটা পড়বে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্রটি জানিয়েছে, জেএমবির প্রতিষ্ঠাকালীন শূরা সদস্য ছিল সোহেল মাহফুজ। ২০১০ সালে জেএমবির আমির মাওলানা সাইদুর রহমান গ্রেফতার হওয়ার পর সোহেল মাহফুজ নিজেকে আমির হিসেবে ঘোষণা করে। তবে কারাগারে থেকেও মাওলানা সাইদুর রহমান আমিরের পদ ছাড়তে রাজি না হওয়ায় তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। পরে সোহেল মাহফুজ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে আত্মগোপনে থেকে জেএমবির নতুন একটি গ্রুপ তৈরি করার চেষ্টা করে।
সূত্রটি আরও বলেছে, সোহেল মাহফুজ বোমা তৈরিতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। বোমা তৈরি করতে গিয়ে তার বাম হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক হাত দিয়েই আগ্নেয়াস্ত্র চালাতে পারে সে। জেএমবির এ নেতার গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায় বলে জানা গেছে। সে গুলশান হামলার অপারেশন কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজানের নিকটাত্মীয়। ছাত্রজীবনে সোহেল মাহফুজ শিবিরের সদস্য ছিল। জেএমবির প্রতিষ্ঠাতা আমির মাওলানা শায়খ আব্দুর রহমানের হাত ধরে সে জেএমবিতে যোগ দেয়। সোহেল মাহফুজ দীর্ঘদিন ভারতে পালিয়ে থাকলেও বছর দুয়েক আগে দেশে ফিরে নব্য ধারার জেএমবির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। এরপর থেকে নব্য ধারার জেএমবির অস্ত্র, বোমা, গ্রেনেড সরবরাহ ও তৈরির মূল ভূমিকা পালন করে আসছিল সে। তবে নব্য জেএমবির সাংগঠনিক কাঠামোতে তার পদ কি রয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। সম্পাদনা: আমিনুর রহমান তাজ।