ক্রেতাদের উপর প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা ২০ পশু হাটের ইজারায় ৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা বৃদ্ধি
ফয়সাল খান: গত বছরের চেয়ে ৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি মূল্যে ১টি স্থায়ীসহ মোট ২০টি হাটের ইজারা দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। ফলে ক্রেতাদের উপর এর প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
সরকারি হিসাব মতে, রাজধানীতে ৪ লাখের মতো পশু কোরবানির সম্ভাবনা রয়েছে। গত বছর ৩ লাখ ৪১ হাজারের মতো পশু কোরবানি হয়েছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ২ লাখ ৬০ হাজার পশুর চাহিদা রয়েছে। এ চাহিদা পূরণে ১৩টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় ১ লাখ এক হাজার ৪১০টি পশুর চাহিদার বিপরীতে ১টি স্থায়ী পশুর হাটসহ ৭টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে কর্তৃপক্ষ। উভয় সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ সূত্রে বিষয়টি আমাদের অর্থনীতিকে নিশ্চিত করা হয়।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, গোপীবাগ বালুর মাঠ সংলগ্ন ব্রাদার্স ইউনিয়ন মাঠের হাটের জন্য গত বারের চেয়ে ৮ গুণ বেশি দর দিয়েছেন শহীদ উদ্দিন। ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা দর দেন তিনি। যা গত বারের চেয়ে ১ কোটি ৭২ হাজার টাকা বেশি। গত বছর ২৬ লাখ ৩০ হাজার টাকায় হাটটি ইজারা হয়। গত বছরের চেয়ে ৩ গুণ বেশি টাকা দর দিয়েছেন ফরহাদ ভূঁইয়া। ধোলাইখাল সাদেক হোসেন খোকা মাঠের সর্বোচ্চ মূল্য ১ কোটি ৫৫ লাখ ৫ হাজার টাকা। যা গত বছরের চেয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা বেশি। হাজারীবাগ ঝিগাতলা মাঠ পশুর হাটটি গত বারের চেয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা দর দিয়েছেন হাজী মনিরুল হক। সর্বোচ্চ ৬৬ লাখ ১০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন তিনি। খিলগাঁও মেরাদিয়া হাটের জন্য গত বারের চেয়ে ১১ লাখ ১০ হাজার টাকা বেশি দর দিয়েছেন শাহ আলম। ৫১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দর দেন তিনি। উত্তর শাহজাহানপুর মৈত্রীসংঘ মাঠের হাটের জন্য গত বারের চেয়ে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা বেশি দর দিয়েছেন আবদুল লতিফ। সর্বোচ্চ ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন তিনি। ধুপখোলা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন খেলার মাঠের জন্য ৪৮ লাখ টাকা বেশি দর দিয়েছেন মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী। তিনি হাটটির জন্য ৯৩ লাখ টাকা দর দেন। কমলাপুর স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকায় প্রথমবারের মতো পশুরহাট বসাবে ডিএসসিসি। হাটটির জন্য সর্বোচ্চ ৩৮ লাখ ২০ হাজার টাকা দর দেন আমির খান। প্রথম দফায় গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম ও আশপাশের এলাকা হাটের সর্বোচ্চ দর দিয়েছিল ডিএসসিসি ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর একেএম মমিনুল হক সাঈদ। আইনগত সমস্যায় পরবর্তীতে তা বাতিল হয়। পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন ফাঁকা স্থানের জন্য গত বছরের তুলনায় চার লাখ টাকা বেশি দর দেন আসাদুজ্জামান। তিনি ১৫ লাখ ২০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন। লালবাগ রহমতগঞ্জ খেলার মাঠের জন্য গত বারের চেয়ে ১ লাখ টাকা বেশি দর ওঠে। সর্বোচ্চ ৯ লাখ ১৫ হাজার টাকা দর দিয়েছে রহমতগঞ্জ মুসলিম সোসাইটি। কামরাঙ্গীরচর ইসলাম চেয়ারম্যান বাড়ির মোড় ও বুড়িগঙ্গা নদীর বাঁধ সংলগ্ন হাটের জন্য ১ লাখ টাকা বেশি দর দেন হাজী আবুল হাসান সরকার। পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা দর দিয়েছেন তিনি। যাত্রাবাড়ী কাঁচাবাজারের হাটের জন্য ৭৫ লাখ টাকা দর দিয়েছে আনোয়ার হোসেন। শ্যামপুর বালুর মাঠ নতুন হাটের মূল্য ৪১ লাখ টাকা দর দিয়েছেন এসএম মাসুদ রানা।
ডিএনসিসি সূত্র জানায়, গাবতলী স্থায়ী হাটসহ ৭টি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেছে ডিএনসিসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উত্তরা ১৫ ও ১৬ নম্বর সেক্টরের সেতু সংলগ্ন ফাঁকা স্থানে পশুর হাটের জন্য ১৬ লাখ টাকা বেশি দর দেয় শফিক অ্যান্ড ব্রাদার্স। তারা ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা দর দেন। খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের ফাঁকা স্থান হাটের জন্য ৯০ লাখ টাকা বেশি দর দেয় সালাম অ্যান্ড সন্স। ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা দর দেন তারা। মিরপুর সেকশন-৬ ইস্টার্ন হাউজিং ফাঁকা স্থানের জন্য ৮ লাখ টাকা বেশি দর উঠেছে। গতবার জেলা প্রশাসনের অধীনে থাকা বাড্ডা (ইদুলিয়া, দাঊদকান্দি, বাঘাপুর), আশিয়ান সিটি হাউজিং ও ভাটারা (সাইদনগর) এলাকায় আরো ৩টি পশুর হাট বসানোর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে উত্তর সিটি করপোরেশন। এদিকে গাবতলী পশুর হাট গতবারের চেয়ে প্রায় ৪ কোটি বেশি টাকায় ইজারা নিয়েছেন বলে জানান ইজারাদার লুৎফর রহমান। সম্পাদনা: রিকু আমির