পাকিস্তানের আদালত প্রাঙ্গণ-খ্রিস্টান কলোনিতে আত্মঘাতী হামলায় নিহত ২২, আহত ৫২
ইমরুল শাহেদ: পাকিস্তানের পেশওয়ারে এবং মারদানে গতকাল শুক্রবার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি আত্মঘাতী বোমাহামলায় অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৫২ জনেরও বেশি। নিরাপত্তা বাহিনীর বরাত দিয়ে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন খবরটি নিশ্চিত করেছে। জঙ্গিগোষ্ঠী জামাতুল আহরারের পক্ষ থেকে দুটি হামলারই দায় স্বীকার করা হয়েছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেশওয়ারের বাইরে ওয়ারসেক ড্যামের কাছে খ্রিস্টান কলোনীতে চালানো হামলাটিতে একজন বেসামরিক ও চারজন হামলাকারী নিহেত হয়েছেন। পাকিস্তান আইএসপিআরের ডাইরেক্টর জেনারেল অসীম বাজওয়া বলেছেন, ‘চার আত্মঘাতী হামলাকারীই নিহত’ হয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলাকারীদের গায়ে আত্মঘাতী জ্যাকেট ছিল। তারা দুর্বল নিরাপত্তার সুযোগ নিয়ে নিরাপত্তা স্থাপনা সংলগ্ন এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করছিল। দুজন আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে পেরেছে। অপর দুজন নিরাপত্তা রক্ষীদের গুলিতে মারা গেছে। কিন্তু সন্ত্রাসী সংগঠনটির মুখপাত্র এহসানউল্লা এহসান বলেছেন, ‘তারা সেনা মুখপাত্র লে. জে. অসীম বাজওয়ার দাবির জবাবে এ হামলা চালিয়েছেন।’ বাজওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, জঙ্গিদের উৎখাত করা হয়েছে। ২০১৪ সালে জার্ব-ই-আজাব নামের জঙ্গিবিরোধী অভিযানের অগ্রগতি তুলে ধরে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের বক্তব্য দেওয়ার একদিন পরই এ হামলা হলো।
পুলিশের বরাতে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, একটি হ্যান্ড গ্রেনেড বিস্ফোরিত করার পর নিজেদের শরীরে বাঁধা বোমাগুলোর বিস্ফোরণ ঘটায় আত্মঘাতী হামলাকারীরা।
রয়টার্স জানিয়েছে, খাইবার পাকতুন খোয়া প্রদেশের মার্দান শহরের প্রধান উদ্ধার কর্মকর্তা হারিস হাবিব বলেছেন, ‘আমরা ১৭ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। আহত উদ্ধার করেছি ৫২ জনকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন আইনজীবী, পুলিশ ও বেসামরিক লোকজন।
আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। ঘটনার পর মারদান এলাকার হাসপাতালগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
মার্দান বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সিএনএনকে বলেছেন, নিহত আইনজীবীদের স্মরণে তিন দিনের শোক পালন করা হবে আদালত পাড়ায়। এ সময় আদালত বন্ধ থাকবে। পেশওয়ার পুলিশের সুপারিনটেন্ডেন্ট কাসিফ জুলফিকার বলেছেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই খ্রিস্টান পল্লী, স্কুল, হাসপাতাল, কলোনী ও গীর্জায় নিরাপত্তা বাড়িয়েছি।’
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের প্রশংসা করে বলেছেন, জীবন ও সম্পদের ক্ষতি না করে হামলাকারীদের নির্মূল করে দেওয়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনী, ফ্রন্টিয়ার কর্পস ও পুলিশের দক্ষতারই প্রমাণ বহন করে। তিনি বলেছেন, ‘এসব কাপুরুষোচিত হামলা আমাদের সন্ত্রাসবিরোধী অগ্রযাত্রাকে রুখে দিতে পারবে না। তাদের এ হামলা প্রমাণ করে তারা হতাশাগ্রস্ত এবং তারা লুকিয়ে থাকার মতো কোনো স্থানই পাবে না পাকিস্তানের মাটিতে।’