দুই মন্ত্রীর জরিমানার দায় নিতে হবে বাংলাদেশের লাখ লাখ উৎকণ্ঠিত মানুষকে
মাছুম বিল্লাহ: আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তি পাওয়া খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের জরিমানার দায় বাংলাদেশের লাখ লাখ উৎকণ্ঠিত মানুষকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান।
দুই মন্ত্রীর শপথ ভঙ্গের বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে একাত্তর টেলিভিশনে সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আমাদের নৈতিক দায় এখন কামরুল ইসলাম এবং মোজাম্মেল হকের ব্যাপারে। কারণ আমি মনে করি লাখ লাখ লোক এ একই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাই আমার মনে হয়, এখন আমাদের দায়িত্ব সাজার ১ লাখ টাকা সংগ্রহ করে তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া। কারণ তারা দুজন আমাদের উদ্বেগটাই প্রকাশ করেছেন এবং তারা সাজা নিয়েছেন, এই সাজা তারা একা ভোগ করবেন কেন?’
দুই মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিভাজিত রায়ের বিষয়ে সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘পাঁচজন বিচারকের রায়ে দুই মন্ত্রী শপথ ভঙ্গ করেছেন, আর তিন বিচারকের বিবেচনায় তারা শপথ ভঙ্গ করেননি, এটা শাস্তিযোগ্য আপরাধ নয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ রায় শিরোধার্য। কোর্ট মনে করতে পারেন যে, মন্ত্রীদ্বয় সীমালঙ্ঘন করেছেন। কিন্তু নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশের মানুষ সেটা মনে করে না।’
আর দুই বিচারকের শপথ ভঙ্গের বিষয়ে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের বক্তব্য, ‘খাদ্যমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা, বিচারপ্রত্যাশী এবং একজন নাগরিক হিসেবে বক্তব্য রেখেছেন, মন্ত্রী হিসেবে নয়। আমি মনে করি খাদ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যের মাধ্যমে কোনো অন্যায় বা ভুল করেননি।’
নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, আমরা সংবিধানের মর্যাদা দেই কিন্তু সংবিধানের মর্যাদা মুক্তিযুদ্ধের উপরে নয়। মুক্তিযুদ্ধ না হলে এ সংবিধান তৈরি হতো না।
তিনি বলেন, মন্ত্রীদ্বয় সঙ্গত আবেগ প্রকাশ করেছেন। আমি কোর্টের সিদ্ধান্তের উপর শ্রদ্ধাশীল। যদিও এটা বিভাজিত রায়। আমি মনে করি বিচারকরা অপরাধ অনুযায়ী সাজা দিয়ে জরিমানা করেছেন। রায়টা আমি মানি তাদের দৃষ্টি থেকে কারণ তারা একটা অবস্থানে রয়েছেন। তাদের জায়গা থেকেই প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা করা তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এ অর্থে তারা সঠিকই করেছেন। তাদের আইন-কানুনের সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকতে হয় এবং সংবিধানের বাইরে কিছু বিবেচনা তারা সাধারণত করেন না।