ফারাক্কার কারণে বাংলাদেশে বন্যার জন্য আমরা দায়ী নই : ভারত
একে শান্তনূ: বর্ষা মৌসুমে গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ‘স্বাভাবিক রাখতে’ ফারাক্কা বাঁধ খোলাই থাকে জানিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এর কোনো বিকল্প নেই। শুক্রবার এক প্রশ্নে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, রাজশাহী-কুষ্টিয়া অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যার জন্য ফারাক্কা বাঁধের সব গেট খুলে দেওয়াকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে যেসব সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে সেগুলো ‘ভুল ও বিভ্রান্তিকর’।
বাংলাদেশে ব্যাপক বিরোধিতার মধ্যে চার দশক আগে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় অভিন্ন নদী গঙ্গায় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করে ভারত সরকার।
ওই ব্যারেজের মাধ্যমে ভারতের পানি প্রত্যাহারে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপত্তি জানানো হয়। এরপর বাংলাদেশ তার প্রাপ্য পানির দাবি জানালে ঢাকা ও নয়াদিল্লির মধ্যে চুক্তি হয়।
গঙ্গার মূলপ্রবাহ পদ্মা চাঁপাইনবাবগঞ্জের কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে যমুনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, শুষ্ক মৌসুমে ভারত তার প্রয়োজন মেটাতে পানি আটকে রাখলেও বর্ষা মৌসুমে নিজেদের এলাকায় বন্যা এড়াতে পানি ছেড়ে দেয়, যা বাংলাদেশকে প্লাবিত করে।
গত সপ্তাহে পদ্মায় পানি বেড়ে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হলে ফারাক্কা ব্যারেজের সব ফটক খুলে দেওয়াকে দায়ী করেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মীর মোশাররফ হোসেন। তবে এ নিয়ে দুই রকমের বক্তব্য আসে বাংলাদেশ সরকারের দুই মন্ত্রীর কাছ থেকে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এ পরিস্থিতির জন্য ফারাক্কার সব গেট খুলে দেওয়াকে দায়ী করলেও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ফারাক্কা পুরো খুলে দিলেও বাংলাদেশে কোনো প্রভাব পড়বে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, তাদের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়েছে, গঙ্গা নদীর পানিপ্রবাহ ঠিক রাখার জন্যই ফারাক্কা বাঁধের গেইটগুলো পরিচালিত হয়।
বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমের খবর উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ভারত হঠাৎ করে ফারাক্কার গেট খুলে দেয় না।
‘বর্ষা মৌসুমে ফারাক্কা ব্যারেজ দিয়ে পানিপ্রবাহের জন্য সব গেট খুলে দেওয়া হয়, এটা নতুন কিছু নয়।’
এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নদী কমিশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতেই হয় বলে দাবি করেন মুখপাত্র।
‘নিয়মিত প্রক্রিয়া হওয়ায় গেট খুলে দেওয়ার বিষয়ে বিশেষ কোনো সতর্কতা বা অ্যালার্ট জারি করা হয় না। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের মিডিয়াতেই বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক পানি বৃদ্ধি ছিল স্বাভাবিক। আগস্ট মাসের জন্য এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।’ সম্পাদনা: রাশিদ রিয়াজ