বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে একমাত্র সিটিস্ক্যান মেশিন তিনমাস ধরে বিকল
রিকু আমির: জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের একমাত্র সিটিস্ক্যান মেশিন তিন মাস ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, সিটিস্ক্যান করতে না পারায় আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন এখানে চিকিৎসা নিতে আসা নি¤œ আয়ের রোগীরা।
সূত্রমতে, মহাখালীতে অবস্থিত এ হাসপাতালে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০টি সিটিস্ক্যান করা হতো।
গত শনিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, রোকসানা নামের একজন রোগী, যিনি ফুসফুসের জটিলতায় আক্রান্ত, চিকিৎসকের পরামর্শে এসেছেন বুকের সিটিস্ক্যান করাতে। কিন্তু বন্ধ শুনে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার উপক্রম। সঙ্গে থাকা তার স্বামী পেশায় রিকশা চালক ইব্রাহিমকে জানানো হয়, এই সিটিস্ক্যান প্রাইভেট হাসপাতালে করাতে প্রায় ছয় হাজার টাকা লাগবে। একথা শুনে ইব্রাহিম ঘাবড়ে যান। প্রশ্নের জবাবে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, চিন্তা করেন, কই আড়াই হাজার আর কই ছয় হাজার। রোগীরে টাইনা (টেনে) লইয়া যাওনের মতো অবস্থা নাই। ‘এখন কী করবেন’- প্রশ্নের জবাবে ইব্রাহিম দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, দেখি, কী করা যায়।
এমন অবস্থা শুধুমাত্র একজন ইব্রাহিমেরই নয়। রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের একজন কর্মী জানান, এখানে যারা সিটিস্ক্যান করাতে আসেন, এ হাসপাতালে যারা ভর্তি হন, তারা সবাই-ই আর্থিকভাবে দুর্বল। প্রতিদিন কতো যে রোগী আসে, ব্যর্থ হয়ে কষ্ট নিয়ে ফিরে যান। অনেকে প্রশ্ন করে আমাদের। উত্তর দিতে দিতে ক্লান্ত হয়ে গেছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউটে মস্তিষ্কের সিটিস্ক্যান করতে খরচ হয় দুই হাজার টাকা, বেসরকারি হাসপাতালে এর পরিমাণ কমপক্ষে চার হাজার টাকা। বুকের সিটিস্ক্যানে খরচ পড়ে দুই হাজার ৫০০টাকা, বেসরকারিতে হাসপাতালে পড়ে ছয় হাজার টাকা। এবডোমেন সিটিস্ক্যান করতে খরচ পড়ে চার হাজার টাকা, বেসরকারিতে এ খরচ ১২ হাজার টাকা।
এর আগে চেলতি বছরের মে মাসের শেষ দিকে হাসপাতাল প্রশাসন জানিয়েছিল, খুব দ্রুতই মেশিনটি ঠিক হয়ে যাবে। গতকাল রোববার হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. শহীদুর রহমান খানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে সাড়া পাওয়া যায়নি। হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যাপক জানিয়েছেন সেই পুরানো কথাই- খুব দ্রুতই মেশিনটি ঠিক হয়ে যাবে। এ কথা শোনা গেছে, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগ থেকেও। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম