পর পর তিন হত্যায় নিউইয়র্কে বাংলাদেশি কম্যুনিটিতে আতঙ্ক ক্ষোভ
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: নিউইয়র্কে পর পর তিনজন বাংলাদেশি আমেরিকান হত্যাকা-ের শিকার হওয়ায় সেখানে অনেকের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কম্যুনিটির মধ্যে এই ব্যাপারে ক্ষোভও বিরাজ করছে। তারা এই সব ঘটনার বিচার চেয়েছেন। সেই সঙ্গে কম্যুনিটির সবার নিরাপত্তা বাড়ানোর উপর জোর দিয়েছেন।
কয়েকদিন আগে দিনে-দুপুরে বাংলাদেশি অধ্যুষিত ওজনপার্কে খুন হয়েছিলেন আল ফোরকান মসজিদের ইমাম মাওলানা আলাউদ্দিন আকুঞ্জি ও তার সহকারী তারাউদ্দিন মিয়া। সেই হত্যাকা-ের বিচার শেষ হতে না হাতেই ৩১ আগস্ট রাত সাড়ে ৯টায় নিজ বাসার মাত্র এক ব্লক দূরে দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন বাংলাদেশি নাজমা খানম (৬০)।
পর পর দুটি ঘটনা ও নাজমা খানমের হত্যাকা- বাংলাদেশি-আমেরিকান নারীদের মাঝেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। নাজমার মরদেহকে শেষ বিদায় জানাতে এসে ঘটনার নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেকেই। জ্যামাইকাতে এ ধরনের বর্বর হত্যাকা- কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না কম্যুনিটির সদস্যরা। তারা তাদের ক্ষোভের কথা সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেন। নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট ল্যাটিশিয়া জেমস ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই ধরনের খুন মেনে নেয়া যায় না। আমরা একের পর এক মুসলিম কম্যুনিটিকে টার্গেট হতে দেখছি। একজন মুসলমানকে হত্যা করা মানেই আমার মত একজন নিউইয়র্কীয়কে হত্যা করা। আমি এই খুনের বিচার চাই, খুনির গ্রেফতার চাই। আমরা মুসলিম কম্যুনিটির নিরাপত্তা চাই, শান্তি চাই, হেজাব ব্যবহারের নিশ্চয়তা চাই। আমি আপনাদের সাথে আছি।
তিনি আরও বলেন, রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আমাদের আবারো অন্ধকার যুগে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছে। তার বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণেই এ সব হামলা বাড়ছে। নিউইয়র্কে হেইট ক্রাইম বাড়ছে। তা না হলে একজন শিক্ষিকাকে এভাবে হত্যা করা হতো না।
কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, একের পর এক বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে। এই জন্য আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা নিউইয়র্ক সিটির প্রশাসনের কাছে জোর দাবী জানচ্ছি বাংলাদেশিদের উপর যেন আর আঘাত করা না হয়। প্রয়োজনে আমরা প্রশাসনকে সহযোগিতা করবো।
নাজমা খানমের ছেলে নাঈমুল আলম তার মায়ের খুনিকে অবিলম্বের গ্রেফতার ও বিচার দাবী করেন।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেনের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মুসলিম সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ডা. ওয়াহিদুর রহমান, নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক অ্যাডভোকেট ল্যাটিশিয়া জেমস, নাজমা খানমের ছেলে মঈনুল আলম খান, নাজমা খানমের আত্মীয় নিউইয়র্ক পুলিশের কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর, নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের প্রতিনিধি মার্কো, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কন্স্যুলেটের কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, কাউন্সিলম্যান রনিল্যান্সম্যান, এ্যাসেম্বলী ওম্যান এলিসিয়া হাইন্সম্যান, নিউইয়র্কের গভর্নর এন্ড্রু কুমোর প্রতিনিধি জুলিয়াস, আফাফ নাসের, মূলধারার রাজনীতিবিদ মাফ মিসবাহ, সারা সৈয়দ, খালিদ লতিফ, আলী নাজনীন, গাজী রহমান, কুইন্স বরো প্রেসিডেন্ট মিলিন্ডা ক্যাটজের প্রতিনিধি মোহাম্মদ হক প্রমুখ। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম