দেশ ছেড়ে পালিয়েছে অনেক ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গিরা দিশেহারা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: একের পর এক জঙ্গিবিরোধী অভিযান আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া অবস্থানের কারণে ঘাপটি মেরে থাকা জঙ্গিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে অনেকে দেশ ছাড়ার চেষ্টা করছেন। তবে ইতোমধ্যে বেশকিছু জঙ্গি ভারতসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে গেছেন বলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, গত ১ জুলাইয়ের পর থেকে ২৬ জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে নারী জঙ্গি ও তাদের মিডিয়ার একটি গ্রুপ রয়েছে।
অপরদিকে, গত ১৯ মে বিজ্ঞানমনষ্ক লেখক অভিজিৎ রায় ও প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনসহ প্রায় ১০টি খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৬ জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ঢাকা মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। তাদের প্রত্যেকের জন্য ২ লাখ টাকা করে ঘোষণা করা হয়। তারা হলেনÑ সুমন, শরিফুল, সেলিম, সিফাত, রাজু ও সাজ্জাদ।
এদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম রাজধানীর খিলগাঁও বাঁশতলা এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে গত ১৮ জুন রাতে নিহত হয়। সে শাহবাগে লেখক অভিজিৎ, গোড়ানের ব্লগার নীলাদ্রি, লালমাটিয়া আহম্মদ রশীদ টুটুল ও সাভারে কলেজ ছাত্র রিয়াদ হত্যায় জড়িত। এরপর গুলশানে গত ১ জুলাই জঙ্গিহামলার মাস্টার মাইন্ড তামিম হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া, নুরুল ইসলাম ওরফে মারজান এবং জঙ্গি নেতা আবু ইউসুফ বাঙ্গালীকে ধরতে খোঁজা হয়। এদের মধ্যে গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে পুরস্কার ঘোষিত জঙ্গি নেতা তামিম হোসেন চৌধুরীসহ ৩ জঙ্গি নিহত হয়। আর তামিম ও মেজর জিয়াকে গ্রেফতারে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল। অভিযানে তামিম নিহত হওয়ায় তার ওই পুরস্কারের টাকাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তিনটি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গত শুক্রবার রাতে রাজধানী মিরপুরের রূপনগরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযানে মেজর মুরাদ ওরফে জাহিদুল ইসলাম নামে এক জঙ্গি নেতা নিহত হয়। তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে জঙ্গি তৎপরতায় জড়িয়ে পড়েন এবং তিনি জঙ্গিদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
সূত্র জানায়, বাংলাদেশে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের পর ভারতে বেশকিছু জঙ্গি পালিয়ে যায়। তাদের মধ্যে জেএমবির কয়েকজনকে ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার করেছে। ভারতে গ্রেফতার হওয়া জেএমবির মাসুদ রানা ওরফে সাজিদ ও তরিকুল ইসলাম ওরফে সুমনের নামও রয়েছে। আর ভারতে খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ মামলায় কওসার ওরফে বোমা মিজান, হাতকাটা নাসিরুল্লা ওরফে সোহেল, তালহা শেখ ওরফে শ্যামল ও সাইদুর রহমানের নাম রয়েছে। এ ৬ জঙ্গি বাংলাদেশের নাগরিক। ফলে বাংলাদেশ সরকারের কাছে তাদের তথ্য চেয়েছে ভারত। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি