‘দেশে জঙ্গিবাদবিরোধী জনমত গড়ে উঠেছে’
ইসমাঈল হুসাইন ইমু: সরকার, আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ নাগরিক সমাজের অব্যাহত বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে দেশে জঙ্গিবাদবিরোধী জনমত গড়ে উঠেছে। গুলশানের হলি আর্টিজানের ঘটনায় বাংলাদেশ সারাবিশ্বে জঙ্গি কার্যক্রমের জন্য আলোচিত হয়েছে। এর ফলে উন্নয়নকর্মী ও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির বিতার্কিকদের সঙ্গে জঙ্গিবিরোধী এক সংলাপে পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। পুলিশ সদর দফতরের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এ সংলাপে অংশগ্রহণ করে ৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা।
পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, জঙ্গিদের নিয়ন্ত্রণে সফলতা এসেছে। জঙ্গিবাদী অভিযান অব্যাহত আছে এবং এক্ষেত্রে জনগণের সমর্থন রয়েছে। বিতার্কিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ভুল বুঝিয়ে, জান্নাতের পথে নেওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে যারা মোটিভেট করতে চায় তাদের ব্যাপারে সতর্ক হতে হবে। শিক্ষার্থীদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষার্থী বা ব্যাচেলরদের বাড়ি ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে কাউকে কোনো প্রকার নিষেধ করা হয়নি। শুধু বলা হয়েছে, ভাড়াটিয়ার তথ্যগুলো রাখতে।
আইজিপি বলেন, অনলাইন প্রপাগান্ডা সম্বন্ধে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। কেউ জঙ্গির পক্ষে একটি পোস্ট দিলে, শিক্ষার্থীদের নৈতিক দায়িত্ব হবে জঙ্গির বিপক্ষে তিনটি পোস্ট দেওয়া। ছাত্র-রাজনীতি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, অতীতে যে ছাত্র রাজনীতি ছিল, এখন আর তা নেই। এখন তাদের মধ্যে কেউ কেউ ছাত্র-রাজনীতিকে রোজগারের অবলম্বন মনে করে। তবে ছাত্র-রাজনীতি থাকা দরকার এবং তা গঠনমূলক হওয়া উচিত। কারণ জাতীয় রাজনীতি সম্বন্ধে তারা জানবে। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশের কাজের মূল্যায়ন জনগণ করবে।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে প্রশংসা করে বলেন, গুলশানে হলি আর্টিজানের ঘটনায় দুজন পুলিশ কর্মকর্তা জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছে পুলিশ মানুষের বন্ধু। শোলাকিয়ায় ঈদ জামাতের পূর্বে পুলিশ যদি নিজের জীবন দিয়ে জঙ্গিদের প্রতিরোধ না করতো তাহলে হয়তো সেদিন ঈদ জামাতের পরিবর্তে অন্য কিছু ঘটতে পারতো। তাই জঙ্গিবাদ নিরসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা নাগরিক দায়িত্ব, একই সঙ্গে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে গিয়ে যাতে কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি বা তাদের পরিবার হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা জরুরি। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ন্যাশনাল ডিবেট ফেডারেশনের মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান খান। সংলাপে ইবাইস ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি-এর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি