আ. লীগের যৌথসভায় শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকরা বড় যুদ্ধাপরাধী
দীপক চৌধুরী: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের জন্য কাজ করে বাংলাদেশকে যখন আমরা আবারও একটা অবস্থায় নিয়ে এসেছি, তখন শুরু হয়েছে জঙ্গিবাদী কর্মকা-। আমরা দ্রুত জঙ্গিদের দমন করতে পেরেছি।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের যৌথসভায় তিনি এসব কথা বলেন। ত্রিবার্ষিক জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে যৌথসভায় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ, উপদেষ্টা পরিষদ এবং সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবদের নিয়ে বৈঠক করেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ সময়, রাজনীতি ও দলের বর্তমান অবস্থানের বিভিন্ন কথা তুলে ধরেন। একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসিয়েছিল, তাদের বিচারের জন্যও দেশবাসীকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গিহামলার বিষয়টি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, মাত্র ১০ ঘণ্টায় আমরা জঙ্গিদের দমন করতে পেরেছি। পৃথিবীর কোনো দেশ এরকম করতে পারে নাই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জঙ্গিরা জীবিত ধরা দেয় না, গুলি খায়, মারা যায়। জঙ্গিদের জন্য খালেদা জিয়ার মায়া কান্না, মানুষ পোড়ানোর জন্যতো তিনি মায়াকান্না করেননি। খালেদা জঙ্গি দিয়ে সাধারণ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, এজন্যই তাদের জন্য তার কান্না।
যুদ্ধাপরাধীদের রায় সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করেছে, মন্ত্রী বানিয়েছে, লাখো শহীদের রক্তে রাঙা, পতাকা তাদের হাতে তুলে দিয়েছে, এরাই সবচেয়ে বড় রাজাকার, সবচেয়ে বড় যুদ্ধাপরাধী। এদেরই বিচার হওয়া উচিত। দেশবাসীকে এজন্য সোচ্চার হতে হবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে জনগণ অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।
তাদের মধ্যে খালেদা জিয়ার সরকারের মন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মো. মুজাহিদ এবং মন্ত্রীর মর্যাদায় উপদেষ্টা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচারের পর মৃত্যুদ-ের শাস্তি কার্যকর হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত আমাদের এ পতাকা যারা যুদ্ধাপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছিল, যারা তাদের মন্ত্রী বানিয়েছিল, ভোট চুরি করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সংসদে বসিয়েছিল, তারাই সব থেকে বড় অপরাধী। তারাই সব থেকে বড় রাজাকার, সব থেকে বড় যুদ্ধাপরাধী, মানবতাবিরোধী অপরাধী। এদের বিচার হওয়া উচিত। দেশবাসীকে সেজন্য সোচ্চার হতে হবে। যুদ্ধাপরাধীদের যারা মন্ত্রী বানাল, তাদেরও বিচার হওয়া উচিত। পঁচাত্তরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকা-ের পর জিয়াউর রহমান, এইচ এম এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার সরকারে স্থান পেয়েছিল স্বাধীনতাবিরোধীরা।
২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর নানা চাপের মধ্যে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচারের উদ্যোগ নেওয়া শেখ হাসিনা বলেন, যারা মা-বোনদের পাকিস্তানের আর্মির হাতে তুলে দিয়েছিল, বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, লুটপাট-অগ্নিসংযোগ করেছে, তাদের বিচার আমরা করছি। বাংলাদেশ অভিশাপমুক্ত হচ্ছে। টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর ভিটায় একাধিকবার অগ্নিসংযোগের কথাও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেনÑ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিম-লীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কাজী জাফর উল্যা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম