হারিয়ে যাচ্ছে বিমানবাহী রণতরি
গত দুই মাস আগে হঠাৎ করে চীনের জলসীমায় ভুলক্রমে একটি তাইওয়ানের ক্ষেপণাস্ত্র এসে পড়ে। পরবর্তীতে পরীক্ষা করে দেখা যায়, এ ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বিমানবাহী রণতরি ধ্বংস করা সম্ভব। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় থেকে বিমানবাহী রণতরির ব্যবহার বেড়ে যায়। তখন জাপান, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্র শত্রুপক্ষকে দমন করার জন্য বিমানবাহী রণতরি ব্যবহার করে। পরবর্তীতে জার্মানি ও জাপান তার নৌবাহিনী থেকে বিমানবাহী রণতরি প্রত্যাহার করে নেয়। পরবর্তীতে বিমানবাহী রণতরি একাধিক দেশ নির্মাণ করে, যেমনÑ যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ফ্রান্স। পরবর্তীতে আরও কিছু দেশ বিমানবাহী রণতরি সংগ্রহ করে। ১৯৭১ সালে হানাদার পাকিস্তানিদের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র তার সচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরি এন্টারপ্রাইজ বঙ্গোপসাগরের পাঠায়। পরবর্তীতে এই বিমানবাহী রণতরি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যায়। একপর্যায়ে ভারত, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা, থাইল্যান্ড, স্পেন ও চীন বিমানবাহী রণতরি তাদের নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী থেকে কিটিহক নামে একটি বিমানবাহী রণতরি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী থেকে বিক্রান্ত নামের বিমানবাহী রণতরিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া রাশিয়া তার নৌবহর থেকে দুটি বিমানবাহী রণতরি, ব্রিটিশ নৌবাহিনী তার নৌবহর থেকে দুটি বিমানবাহী রণতরি প্রত্যাহার করে নেয়। বিমানবাহী রণতরি পরিচালনা করা অত্যন্ত কঠিন একটি বিষয়। শত্রুপক্ষকে দমন করার জন্য বিমানবাহী রণতরির কোনো তুলনা নেই। কিন্তু বিশাল আকৃতির কারণে সব জায়গায় বিমানবাহী রণতরি যেতে পারে না। যেখানে ফ্রিগেট, ডেস্ট্রয়ার ও ক্রুজার দিয়ে শত্রুপক্ষের যেকোনো যুদ্ধ জাহাজকে ধ্বংস করা সম্ভব। অর্থাৎ বিমানবাহী রণতরি কোনো নৌবাহিনীতে না থাকলেও তাদের কাছে যদি বিমানবাহী রণতরি ধ্বংস করতে সক্ষম মিসাইল থাকে তাহলে সে দেশের নৌবাহিনীর কাছে যেকোনো দেশের বিমানবাহী রণতরি সম্ভব। ইতোমধ্যে চীন, রাশিয়া, তাইওয়ান, ইরান ও পরশক্তিগুলো বিমানবাহী রণতরি ধ্বংস করার উপযোগী মিসাইল তৈরি করে ফেলেছে। যে কারণে একাধিক দেশের নৌবহর থেকে বিমানবাহী রণতরি প্রত্যাহার করার চিন্তা-ভাবনা চলছে, এর মধ্যে যদিও ব্রিটিশ নৌবাহিনী থেকে সব কটি বিমানবাহী রণতরিকে প্রত্যাহার করার পর নতুন করে দুটি বিমানবাহী রণতরি নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের মধ্যে ব্রিটিশ নৌবাহিনীকে এই দুটি বিমানবাহী রণতরি যোগ দিবে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় আকৃতির একটি বিমানবাহী রণতরি, যেমনÑ কন্সটিলেশন ও সারাতোগার ওজন হচ্ছে ৯০০০০ টন। এত বিশাল ওজনের বিমানবাহী রণতরি রাখার চেয়ে বিমানবাহী রণতরি ধ্বংস করতে সক্ষম মিসাইল তৈরি করার দিকে একাধিক দেশ মনোযোগ দিয়েছে।
সম্পাদনা: আশিক রহমান