প্রসঙ্গ পুরনো কারাগার : প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাই বাস্তবায়িত হোক
বর্তমানে ছাত্রীদের জন্য ১০০০ আসনের একটি হল নির্মাণাধীন এবং ছাত্রদের জন্য আরও দুটি হল নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন আছে। এছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জায়গার ব্যবস্থা করার বিষয়টি সরকারের সর্বোচ্চ মহল বিবেচনা করছে বলে জানানো হয়। এমতাবস্থায়, সরকারের সর্বোচ্চ মহলের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান শিক্ষার্থীদেরকে একাডেমিক কার্যক্রমে ফিরে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থাৎ পুরনো কারাগারের জমিতে ‘হল’ নির্মাণের কোনো দাবি আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেই। বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছা ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকল সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ উপাচার্য মহোদয়।
৩. ১৭৮৮ সালে স্থাপিত হয় পুরনো কারাগারটি। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম এক সাক্ষী। পুরনো কারাগারের বর্তমান স্থাপনার মধ্যে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস রয়েছে। যেমন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘদিন বন্দি ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের দেওয়ানি সেলে। তার সে স্মৃতি ধরে রাখতে দেওয়ানি সেলকে ‘বঙ্গবন্ধু কারা স্মৃতি জাদুঘরে’ রূপান্তর করা হয়। এই জাদুঘরে বঙ্গবন্ধুর ব্যবহার্য জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর কারা জীবনের ইতিহাস জানাতে এখানে একটি লাইব্রেরি গড়ে তোলা হয়েছে। সেলের সামনে জাদুঘর প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে লাগানো একটি কামিনী ফুলগাছ ও একটি সফেদাগাছ কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের যে সেলে নৃশংসভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়, সেই সেলও সংরক্ষণ করা হবে। ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতার স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার সেল, ফাঁসির মঞ্চ, আমদানি সেল, পুকুরসহ আরও বেশকিছু স্থাপনা সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে। অন্য স্থাপনাগুলো ভেঙে করা হবে পার্ক। এছাড়া নাগরিক সমাজের দাবি রয়েছে উন্মুক্ত স্থান পাওয়ার। তারা যেন সেখানে গিয়ে সবুজের সমারোহ দেখতে পায়। এজন্য লাগানো হবে গাছ। পার্কে সবুজ ঘাসও জন্মাবে। অন্যদিকে কারাগার সংলগ্ন চকবাজার থানার জন্য কারাগারের কিছু জমি দেওয়া হবে।
৪. এভাবে পুরনো কারাগারের জায়গাকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হলে, ঘনবসতিপূর্ণ ঢাকার মানুষ একটু ফাঁকা জায়গায় নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে। এখানে খোলা জায়গার বড়ই অভাব। পুরানো ঢাকার শিশুরা সব ধরনের চিত্তবিনোদন থেকে বঞ্চিত। এই ঢাকায় প্রাণ ফিরে আসবে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছেগুলো দ্রুত বাস্তবায়িত হলে। এজন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘হলে’র দাবি ন্যায্য হলেও পুরনো কারাগারের জায়গায় নয় বরং অন্যত্র স্থাপন করা হচ্ছে এটাই বাস্তবতা। (শেষ)
সম্পাদনা: জব্বার হোসেন