ইমরুল শাহেদ: মঙ্গলবার বিকালে সর্বদলীয় বৈঠকের পর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুসারে কর্নাটকের কৃঞ্চরাজাসাগর ড্যাম ও কাবিনি ড্যাম থেকে তামিলনাড়–তে পানি সরবরাহ শুরু করে দিয়েছে রাজ্যের কংগ্রেস সরকার। কিন্তু বিরোধী দলগুলো রাজ্য সরকারের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে। বিরোধী দলগুলোর মধ্যে রয়েছে বিজেপি ও জেএসডি। পানি সরবরাহ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরই স্থানীয় জনগণ বিক্ষোভে নতুনভাবে ফেটে পড়ে। এনডিটিভি জানিয়েছে, তারা গরুর গাড়ি ও টায়ার জ্বালিয়ে রাজপথ বন্ধ করে দেয়। বিক্ষোভের মুখে সব যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত সোমবার শামা শস্য বাঁচানোর জন্য আগামী ১০ দিন কর্নাটকের কাবেরি থেকে ১৫ হাজার কিউসেক পানি তামিলনাড়–র দিকে সরবরাহের জন্য ভারতের সুপ্রিম কোর্ট যে আদেশ দিয়েছে, তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠে কর্নাটকের কৃষকরা। তারা মহীশূর ও বেঙ্গালুরুর রাস্তা তখনই বন্ধ করে দেয়। কর্নাটকের ‘কাবেরি ওয়াটার অ্যাজিটেশন গ্রুপ’ প্রধান জি মাদেগাওদা রাজ্যের কংগ্রেস সরকারকে সাবধান করে দিয়ে বলেছে, যদি কৃষকদের বঞ্চিত করে পানি দেওয়া হয় তাহলে রাজ্য সরকারকে এজন্য ভয়ানক পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি সুপ্রিম কোর্টে কর্নাটক লিগ্যাল প্যানেল প্রধান ফালি এস নরিমনের অপসারণ দাবি করেছেন। কারণ তিনি মামলাটি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেননি বলে তিনি মনে করেন। কাবেরির পানি বণ্টন একটি পুরনো সমস্যা। এ সমস্যাকে কেন্দ্র করে অতীতে অনেক সহিংস ঘটনা ঘটেছে। পানি সংকটের কারণে অনেক কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বর্তমানে চলমান বিক্ষোভ দমনে রাজ্য সরকার মান্ডি অঞ্চলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে। বিশেষ করে বেঙ্গালুরু-মহীশূর রাস্তা ও মহীশূরের কাছে কৃঞ্চরাজাসাগর ড্যাম পাহারার জন্য। কাবেরির সহিংস উত্তেজনার কারণে মান্ডির জেলা কালেক্টর বৃন্দাবনমুখী পর্যটকদের ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেছেন। সেখানেই হলো কৃঞ্চরাজাসাগর ড্যাম। কর্নাটকের রাজ্য পরিবহন সংস্থা মঙ্গলবার মান্ডি হয়ে যাতায়াত করা বাসগুলোর সার্ভিসও বন্ধ করে দিয়েছে।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া রাজ্যের এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বিকালে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকেন। আলোচ্য বিষয় ছিল আদালতের আদেশের প্রেক্ষাপটে কিভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি করা যায়। তিনি বলেন, কর্নাটক ও তামিলনাড়–র পানি সমস্যা সমাধানের জন্য মৌসুমী ঋতুতে অপর্যাপ্ত বৃষ্টির কারণে কাবেরি ব্যাসিনে যথেষ্ট পরিমাণ পানি নেই।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী যখন বিশেষজ্ঞ ও বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনায় বসেন তখনও সেখানে কৃষকরা ধর্মঘট (বন্ধ) পালন করছিলেন। মান্ডি অঞ্চলের কৃষিকাজ ও পানীয় জলের সমস্যা মোকাবিলায় ব্যবহৃত হয় কাবেরি নদীর পানি। তবে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখনো সুপ্রিম কোর্টের আদেশের কোনো কপি পাইনি। সেটা পেলে আমরা সর্বদলীয় বৈঠকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস