পরাগ মাঝি : ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি বোমা ফেলা হয়েছিল যে দেশটিতে সেটি হলো লাওস। আর এ হামলার নেপথ্যে ছিল আমেরিকা। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় তারা এ হামলার ঘটনা ঘটায়। বেশ দেরিতে হলেও আমেরিকার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ইতিহাসের ওই কালো অধ্যায়ের জন্য দু:খ প্রকাশ করেছেন। তিনি বর্তমানে ওই দেশটি সফর করছেন।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মঙ্গলবার লাওসে ওবামার ওই সফরটি হলো আমেরিকার কোন চলতি প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময়কাল স্মৃতিচারণ করে ওবামা বলেন, ‘লাওজিয়ানদের ভাষায় ওই বোমাগুলো পড়েছিল বৃষ্টির মতো।’
ষাট ও সত্তরের দশকজুড়ে ওইসব বোমাহামলার কথা উল্লেখ করে ওবামা বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, ইতিহাসের ওই ব্যাপারগুলো আমলে নিয়ে লাওসকে সহযোগিতা করার দায় রয়েছে আমাদের।’ এ সময় লাওসের মাটি থেকে অবিস্ফোরিত বোমাগুলোকে পরিষ্কার করতে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলারের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন তিনি। গত ২০ বছরে অবশ্য এ খাতে প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে।
ধারণা করা হয়, দেশটির ভূমিতে এখনো প্রায় ২৮৮ মিলিয়ন ক্লাস্টার বোমার ধ্বংসাবশেষ এবং প্রায় ৭৫ মিলিয়ন অবিস্ফোরিত ক্লাস্টার বোমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
লাওজিয়ানদের প্রেসিডেন্ট ওবামা ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি বোমাহামলার শিকার একটি জাতি হিসেবে বর্ণনা করেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের সময় ১৯৬৪-৭৩ সালের মধ্যে গড়ে দেশটিতে প্রতি মিনিটে প্রায় ৮টি করে বোমা বর্ষিত হয়েছে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ বোমাবর্ষিত হয়েছিল লাওসে তারচেয়েও বেশি বোমা ফেলা হয়।
লাওসের ১৮টি প্রদেশজুড়ে প্রায় ৫ লাখ ৪০ হাজার ৩৪৪টি বোমাহামলার মিশন পরিচালনা করেছিল মার্কিন বাহিনী। তাদের ফেলা প্রায় ৩০ শতাংশ বোমাই অবিস্ফোরিত থেকে যায়।