দীপক চৌধুরী: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজ পর্যায়ের উচ্চশিক্ষা উন্নয়নে ৭৮০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব কাজী শফিকুল আযম এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে ঢাকা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রিডিরেক্টর ড. জাহিদ হোসেন।
এ প্রকল্পের আওতায় ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী করা, অনার্স ও মাস্টার্স কোর্স পরিচালনাকারী সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি কলেজসমূহে শিক্ষাদান ও শিক্ষার পরিবেশ উন্নত করা। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নজরদারি এবং পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার, কলেজের শূণ্য পদে নিয়োগ প্রদান নিশ্চিতকরণসহ শিক্ষক নিয়োগ, দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা উন্নত করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রিডিরেক্টর বলেন, শিক্ষাখাতকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। মোট বরাদ্দের ১৯ শতাংশ ঋণ দেওয়া হচ্ছে শিক্ষাখাতে। আগে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষাখাতে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। এখন উচ্চশিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা এবং সকল শিক্ষায় সহায়তা বাড়ানো হয়েছে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এ খাতে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
শফিকুল আযম বলেন, কিছু শর্ত পূরণ করলে ঋণ উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি অর্থ ছাড় করবে। মূলত শর্ত হিসাবে এ প্রকল্পের ডিসবার্সমেন্ট ইনডিকেটর লিংক (ডিএলআই) মেনে অর্থ ছাড় করা হবে। ভবিষ্যতে উচ্চশিক্ষায় খাতভিত্তিক কর্মসূচি হাতে নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। বর্তমানে স্বাস্থ্য ও প্রাথমিক শিক্ষায় এ ধরনের কর্মসূচি চালু রয়েছে।
প্রকল্পটির আওতায় সরকারি কলেজগুলোর ২ হাজার ৭০০ শিক্ষকের শূণ্য পদ পূরণ করতে সাহায্য করবে। প্রকল্পটি শিক্ষকদের উন্নয়নে সাহায্য করবে এবং জাতীয় প্রশিক্ষণ সংস্থা ও নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ সংস্থা স্থাপনের মাধ্যমে প্রায় ৮ হাজার কলেজ শিক্ষক ও পরিচালকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২১ সালের জুনের মধ্যে এ প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড.হারুন-অর-রশিদ বলেন, গত কয়েক বছরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। সেশন জটে নাকাল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখন নির্দিষ্ট সময়ে শিক্ষা জীবন শেষ করতে পারছে। অনলাইনে যাবতীয় তথ্য পাচ্ছে। পুরো সিলেবাস ঢেলে সাজানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, নতুন এ প্রকল্পটির মাধ্যমে কলেজ শিক্ষা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে। অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি মানসম্মত শিক্ষা পাবে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের উপর বার্ষিক শূণ্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং শূণ্য দশমিক ৫০ শতাংশ হারে কমিটমেন্ট ফি দিতে হবে। সম্পাদনা : দীপক চৌধুরী