রাজাকারের সন্তানদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে : আনিসুল হক
মাহমুদুল আলম: যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা এ দেশে প্রথম শ্রেণির নাগরিক হতে পারবে না বলে জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘তারা হবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক। তারা কখনও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করতে পারবে না’। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে এ বক্তব্য দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক রাজাকারের সন্তানদের ব্যাপারে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে বলেছেন, ‘রাজাকারদের সন্তানরা মুক্তিযুদ্ধের অনুসারী নয়, তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাবে। তাই তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে’।
রাজধানীর ধানমন্ডির ওমেন্স ভলান্টিয়ারি অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লিউভিএ) মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব বক্তব্য দেন তারা।
সভায় একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নির্বাহী সভাপতি ও সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির নির্মিত ‘জার্নি টু জাস্টিস’ নামের একটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়। তথ্যচিত্রে একাত্তরে গণহত্যার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের সন্তানরা নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে’।
আনিসুল হক বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ কীভাবে শহীদ পরিবার এবং সাধারণ জনগণের উপকারে আসে, তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। নতুন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে’।
মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তরে জনগণের মতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে বলে জানান আইনমন্ত্রী। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, জনগণ যা চায়, তা-ই হবে। যেখানে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে, তা ইতিহাসের স্থান হয়ে গেছে।
অনুষ্ঠানে জিয়াউর রহমানের কবরে জিয়াউর রহমানের দেহ নেই বলে দাবি করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। তিনি বলেন, ‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি। ডিএনএ টেস্ট করান। যদি সেখানে জিয়ার দেহ থাকে, তাহলে নাকে খত দিয়ে জাতির কাছে ক্ষমা চাইব’।
সংসদ ভবন এলাকা থেকে জিয়ার কবর সরানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্পিকারকে আগেও চিঠি দিয়েছি। আবারও লিখেছি। লুই আই কানের নকশা ভঙ্গ করে সেখানে জিয়ার কবর বসানো হয়েছে’।
’৭১-এর গণহত্যা থেকে ‘গুলশান হত্যাকা- : বিচার বিঘিœতকরণের চক্রান্ত’ শীর্ষক এ আলোচনা সভায় আ ক ম মোজাম্মেল হক এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নামে শহীদ জিয়া শিশুপার্কটি থাকবে না। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকেন্দ্র হবে। প্রধানমন্ত্রী অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে কর্মযজ্ঞ শুরু হবে’।
একই সঙ্গে পাকিস্তানের ১৯৫ যুদ্ধাপরাধীর বিচার করতে আর কোনো বাধা নেই বলে উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বিচার করার জন্য আন্তর্জাতিক সমর্থন চাইব।’
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, পান্না কায়সার, প্রজন্ম ’৭১-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী। সম্পাদনা: রিকু আমির