নারীদের পোশাক নিয়ে মুসলিম দেশগুলোতে পরিচালিত জরিপ যা বলছে ইউরোপে বোরকা বিতর্কের ঝড়
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইউরোপে বুরকিনি এবং বোরকা নিষিদ্ধ নিয়ে বিতর্কের ঝড় চলছে। এর মধ্যেই বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে নারীদের পোশাক নিয়ে জরিপ চালানো হয়। এতে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মুসলিমই চান নারীরা তাদের মুখম-ল এবং চুল ঢেকে রাখুক। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
জনসম্মুখে মুসলিম নারীরা কী ধরনের পোশাক পরবেন সে ব্যাপারে কড়া আইন কানুন রয়েছে সৌদি আরবে। তা সত্ত্বেও দেশটির অর্ধেক মানুষ বিশ্বাস করেন নারীদের তাদের পছন্দ মতো পোশাক পরার স্বাধীনতা দেওয়া উচিত। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক জরিপে এমনটাই দেখা গেছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, সৌদি আরবসহ আরও বেশ কয়েকটি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মানুষ বলেছেন, জনসম্মুখে নারীদের চুল ঢেকে রাখার মতো ঘোমটা পরা উচিত। তবে অনেকে আবার নারীদের তাদের নিজেদের পোশাক পছন্দের ব্যাপারে আরও স্বাধীনতা দেওয়ার কথা বলেছেন।
তিউনিসিয়ার ৫৬ শতাংশ মানুষ মনে করেন নারীদের তাদের নিজেদের পোশাক-আশাকের ব্যাপারে পুরোপুরি স্বাধীন করে দেওয়া উচিত। একই মত পোষণ করেন তুরস্কের ৫২ শতাংশ এবং লেবাননের ৪৯ শতাংশ মানুষ। তবে পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং মিসরসহ অন্যান্য মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে আরও কম সংখ্যক মানুষ নারীদের পোশাকের ব্যাপারে পুরোপুরি স্বাধীনতা দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
ইরান এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতেও নারীদের পোশাক পরার ধরন নিয়ে আইন আছে। তবে এসব দেশে অবস্থানকারী পশ্চিমা নারীদের সবসময় এ আইন মেনে চলতে হয় না।
২০১৪ সালে মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয় ৭টি মুসিলম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ওই জরিপ চালায়। জরিপে দেখা গেছে, বেশিরভাগ মুসলিমই চান নারীরা সবসময় তাদের চুল ঘোমটা দিয়ে ঢেকে রাখুক।
লেবানন অবশ্য এ ক্ষেত্রে একটু ব্যতিক্রম। আর তুরস্কের মাত্র এক তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন নারীরা জনসম্মুখেও খোলা চুলে আসতে পারেন। তবে সৌদি আরব এবং পাকিস্তানের বেশিরভাগ মানুষ নারীদের চুল ঢেকে রাখার জন্য ঘোমটার পাশাপাশি মুখম-ল ঢেকে রাখার জন্যও নিকাব ব্যবহারের কথা বলেছেন।
ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে বোরকা নিষিদ্ধ নিয়ে তীব্র বিতর্কের ঝড় চলছে। সম্প্রতি ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে বোরকা নিষিদ্ধ করে আইন প্রণয়নের প্রেক্ষিতে এ বিতর্কের সূত্রপাত হয়। জার্মানিও একই পদক্ষেপ গ্রহণের চিন্তা করছে। ওদিকে নেদারল্যান্ড ইতোমধ্যেই নারীদের মুখ ঢেকে রাখার উপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আর বার্সেলোনা বেশ কিছু সরকারি স্থানে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে ধর্মীয় পোশাক বা প্রতীক পরিধানে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ইউগভ-এর এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ব্রিটিশদের দুই-তৃতীয়াংশই নারীদের দেহ পুরোপুরি ঢেকে রাখার মতো পোশাক পরিধানের উপর আইনগত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক তা চান। সম্পাদনা: ইমরুল শাহেদ