অঙ্গ প্রতিস্থাপন এবং ‘অবিশ্বাস্য’ কিছু গল্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী সমাধান এই অঙ্গ প্রতিস্থাপন। মৃত্যুর পর অঙ্গ দান করার জন্য প্রচার চলছে সর্বত্র। ফলও মিলতে শুরু করেছে, প্রাণ বাঁচছে অসংখ্য মানুষের। এই অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে অদ্ভুত সব গল্প। এর মধ্যে বেশকিছু মজাদার, আবার বেশকিছু দুঃখের। আবার বেশ কয়েকটি গল্প বিশ্বাস করাই কষ্টকর। দেখে নেওয়া যাক তেমনই কিছু অদ্ভুত গল্প। আনন্দবাজার
৫৭ বছরের জিমি সু জন্মেছিলেন একটিমাত্র কিডনি নিয়ে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই কিডনিটি কাজ করা বন্ধ করলে শুরু হয় ডায়ালিসিস। স্বামী এবং তিন সন্তানের কারও সঙ্গে কিডনি ম্যাচ না করায় জিমির স্বামী ৭৮ বছরের ল্যারি সুইলিং একটি বিলবোর্ডে কিডনির আবেদন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পথে পথে ঘুরতে থাকেন। অবশেষে ২০১৩ সালে পাওয়া যায় কিডনি। প্রতিস্থাপনের পর এখন সুস্থ জিমি।
অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর ডেমি লি’র সঙ্গে যা ঘটেছিল, তেমনটা আর কখনও ঘটেনি। ১৫ বছরের লি’র লিভার ট্র্যান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছিল। দিব্যি ছিল কিশোরী। ন’মাস পর হঠাৎই শরীর খারাপ হতে শুরু করে। পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা দেখেন, রাতারাতি বদলে গিয়েছে লি’র ব্লাড গ্রুপ! ছিলেন ও পজিটিভ, হয়ে গিয়েছেন ও নেগেটিভ। এর ফলে পুরনো ওষুধ উল্টো কাজ করছে তার শরীরে। কোনোক্রমে প্রাণ বাঁচলেও আজীবন ওষুধই ভরসা লির।
অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অন্যতম করুণ কাহিনী জড়িয়ে রয়েছে নিউইয়র্কের ডেবি স্টিভেন্সের সঙ্গে। ৪৭ বছরের স্টিভেন্স কিডনি দান করেন নিজের মরণাপন্ন বসকে। পরিবর্তে চাকরিতে যোগ দিয়ে পরের দিনই স্টিভেন্সকে বরখাস্ত করেন তার বস। মর্মাহত স্টিভেন্স বলেছিলেন, ‘আমি বসকে আমার কিডনি দিলাম, পরিবর্তে বস আমার জীবনটাই নিয়ে নিলেন।’
তুরস্কের মেলিহা আকভির কিডনি হঠাৎই কাজ করা বন্ধ করে দেয়। চলতে থাকে চিকিৎসা। সেই সময়ে মেলিহার স্বামী অন্য এক মহিলার প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েন। কিডনি প্রতিস্থাপন যখন আবশ্যক হয়ে পড়ে, তখন সেই মহিলা, আইসে ইমদাত নিজের একটি কিডনি দিয়ে মেলিহাকে বাঁচিয়ে তোলেন। এর পর মেলিহার স্বামীর সঙ্গে বিয়ে হয় আইসের। কিডনির সঙ্গে স্বামীকেও ভাগ করে নিয়েছেন তারা।
স্ত্রীর কিডনি কাজ করা বন্ধ করায় নিজের কিডনি দিয়ে তাকে বাঁচান মার্কিন চিকিৎসক রিচার্ড বাতিস্তা। মাস কয়েক পরেই স্ত্রীর কাছ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিস পান রিচার্ড। নোটিসের উত্তরে স্ত্রীর কাছ থেকে কিডনি অথবা ১৫ লাখ ডলার ফেরত চান তিনি। কিডনি অবশ্য ফেরত পাননি রিচার্ড। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ