ঈদের পর ‘যুবক’ নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক
হাসান আরিফ: যুবকের বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর বৈঠক করবে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এরপরই উভয় মন্ত্রণালয় আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জানা গেছে, রাজধানীর শাহবাগের আজিজ কো-অপারেটিভ মার্কেটে কয়েকটি দোকান ভাড়া নিয়ে ১৯৯৪ সালে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যাত্রা শুরু করে যুবক। ১৮৬১ সালের সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের আওতায় যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয় (আরজেএসসি) থেকে নিবন্ধন নেয় প্রতিষ্ঠানটি। ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটি উচ্চ সুদের বিনিময়ে আমানত সংগ্রহ ও ঋণদান কর্মসূচি চালু করে। কিন্তু এর কোনো কার্যক্রমই সরকারের নজরদারিতে আসেনি।
যুবকের প্রতারণামূলক কার্যক্রম নিয়ে ২০০৫ সালে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে থাকলে তদন্তে নামে বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৬ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্তে বেরিয়ে আসে যুবকের অবৈধ ব্যাংকিংসহ নানা প্রতারণার চিত্র। তখনই এর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ২৬ জানুয়ারি যুবকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকদের তালিকা তৈরি এবং স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বেহাত না হওয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়।
ফরাসউদ্দিন কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী সরকার পরে ২০১১ সালের ৫ মে সাবেক যুগ্ম সচিব রফিকুল ইসলামকে চেয়ারম্যান করে গঠন করে দুই বছর মেয়াদি যুবক কমিশন। মেয়াদ শেষে এ কমিশন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে যুবকে প্রশাসক নিয়োগসহ ১৪টি সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়।
এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবদুল মান্নানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ওই কমিটিও যুবকে রিসিভার নিয়োগের সুপারিশ করে। ওই কমিটি আরও সুপারিশ করে- অতি মুনাফালোভী এবং সহজ-সরল বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত লোক অতি সহজে যুবকের পাতা ফাঁদে ধরা পড়ে এবং একপর্যায়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যায়। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা শুধু যুবকের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে, অন্য বিষয়ে তাদের তেমন কিছু করার নেই। যুবকের ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা ‘যুবকে ক্ষতিগ্রস্ত জনকল্যাণ সোসাইটি’ নামে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে একটি সংগঠন করেছেন। সম্পাদনা: রিকু আমির