ফেসবুকে বাংলাদেশ
জীবন ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠুক
আনিসুল হক, কথাসাহিত্যিক
চলতি সপ্তাহটি মিথুনের একটি সোনামাখা সপ্তাহ হতে যাচ্ছে। আমাদের দেশের একদল মিথুন আছেন যারা নিজের এবং অন্যের মনের মেঘ উড়িয়ে দিতে দক্ষ। এদের আমি এক্সপোর্ট কোয়ালিটির মানুষ বলে চিহ্নিত করতে চাই। কোনো কোনো মিথুনকে চলতি সপ্তাহে আমি মনের আনন্দে সামাজিকতা ও ভ্রমণ করতে দেখি। আপনার জীবন ফুলে ফুলে রঙিন হয়ে উঠুক।
আমার এই প্রিয় শিল্পী কে?
প্রভাষ আমিন, অ্যাসোসিয়েট হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ
‘আমার লাইন হইয়া যায় আঁকাবাঁকা
ভালো না হাতের লেখা
আসো যদি বাঁশ বাগানে
আবার হবে দেখা…’
বিখ্যাত ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলতে আমার লজ্জা লাগে। কিন্তু গত সপ্তাহে অফিসের নিচে সূর্য আর বিপুল যখন পরিচয় করিয়ে দিল, লজ্জার মাথা খেয়ে বললাম, আমি একটা ছবি তুলতে চাই। পলকের দেখায় আমি ফিরে গেলাম ৩২ বছর আগে। আশির দশকে তার দুটি অ্যালবাম ছিল বাজারে। দুটিই এখনও আমার ঠোটস্থ। ৩২ বছর পরও আমি গুনগুন করি ‘আমার সাদা দিলে কাদা লাগাই…’। তখন তার ‘আমি বন্দি কারাগারে…’ প্রায় জাতীয় সঙ্গীতের মতো জনপ্রিয়তা পেয়ে গেছে। নামকরণের সার্থকতা প্রমাণ করতেই কিনা, দীর্ঘদিন পরদেশে কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। তার গানে কোনো কাব্য নেই, শিল্প নেই; আছে মাটির ঘ্রাণ। তার গান একেবারে কইলজায় গিয়ে মোচড় দেয়, টের পাওয়ার আগেই চোখে নামে বাদল ধারা। বন্ধুরা আপনারা কি চেনেন, আমার এই প্রিয় শিল্পী কে? মুজিব পরদেশী। এবার ঈদে এটিএন নিউজের নানা আয়োজনে থাকছেন তিনি। দীর্ঘদিন পরদেশে থাকলেও বিদেশি বাবু তো দূরের কথা, শহুরেও হতে পারেননি। এখনও তিনি তার গানের মতোই আনস্মার্ট, ক্ষেত, গেরাইম্যা, এক্কেরে মুন্সীগইঞ্জা।
বাংলাদেশ তোমাদের সঙ্গে আছে
অজয় দাশগুপ্ত, সিডনি প্রবাসী, কলামিস্ট ও বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষক
এই মেয়েগুলোকে যারা অপমান করেছে তারা জানে, এদেশে রানা প্লাজার খুনি অপরাধী চড়ে হেলিকপ্টারে। পরাজিতরা উড়ে বেড়ায়। যার যত দুর্নাম আর ব্যর্থতা তত হাঁকডাক। সম্মান বয়ে আনার বিষয়টাই এখন কেমন কেমন। তার ওপর গরিব ঘরের মেয়ে। বাফুফে তো বলেই দিয়েছে এরা নাকি বিলাসী গাড়িতে কমফোর্ট ফিল করে না।
এদের প্রাপ্য বাসে লাঞ্চনা, স্কুলে অপমান, সমাজে সামাজিক মিডিয়ায় লাইক আনলাইকের আহা উহু। প্রধানমন্ত্রী নিজে যেখানে বললেন, ছেলেরা গোল খায় আর মেয়েরা গোল দিয়ে আসে, সেখানে এতসব অপঘটনা কি পুরুষের প্রতিশোধ? না মেয়েদের পথরোধ করা?
শোন মেয়েরা, এগারো জোড়া পা-ই যথেষ্ট। তোমরা তো পারো, জানো কিভাবে কিক নিতে হয়। মা জননীরা এবার কিকটা পুরুষ নামধারী নারী শক্তি বিরোধিদের ওপর চড়াও। আমরা দেখি, তোমাদের যাদু পায়ের ছোঁয়ায় অন্যায় জালে জড়িয়ে আর জয় ভাসতে ভাসতে চলেছে বাংলার আকাশে। তোমরা পারবে। শুধু লাথিটাই দরকার। দিয়ে দেখ। সারাদেশ দুনিয়াজোড়া বাংলাদেশ তোমাদের সঙ্গে আছে।
এরাও এক ধরনের প্রতারক
স্বকৃত নোমান, কথাসাহিত্যিক
বইয়ের নাম ‘বাংলা ছোটগল্প পর্যালোচনা¯ বিশ শতক।’ সম্পাদক শ্রাবণী পাল। মোট ৩৫ জন গল্পকারের গল্পের পর্যালোচনা নিয়ে বইটি। এদের মধ্যে সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় ও সৈয়দ মোস্তাফা সিরাজের গল্প নিয়ে কোনো পর্যালোচনা নেই। অভিজিৎ সেন, অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় বা অমর মিত্রের কথা না হয় বাদ থাক। সন্দীপন ও সিরাজকে বাদ দিয়ে এই ধরনের বই সম্পাদনা করা রীতিমতো অন্যায়। এটাকেই বলে লিটারারি ক্রাইম। ৭২০ টাকা দিয়ে কেনা বইটা এখন জানালা দিয়ে ছুঁড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। কলকাতায়ও দেখছি বিস্তর ফাঁকিবাজ লেখক-সম্পাদকের ছড়াছড়ি। এরাও এক ধরনের প্রতারক। পাঠকদের সঙ্গে তারা প্রতারণা করেন।
জিয়াউর রহমানের লাভ-ই হবে
সাহেদ আলম, নিউইয়র্ক প্রবাসী সাংবাদিক
আমাদের সময়ে আমরা বড় হয়েছি পাঠ্যক্রমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সাধারণ মানের একজন নেতা জেনে। কি সেই মান? ওই তো ৭ মার্চ তিনি রেসকোর্স ময়দানে বলেছিলেন, এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম আর স্বাধীনতার সংগ্রাম। বলতে চেয়েছি, রাষ্ট্রীয়ভাবে বঙ্গবন্ধুকে আড়াল করার চেষ্টা অনেক বেশি ছিল সে সময়, এখন যেমন আবার সবকিছুতেই বঙ্গবন্ধুকে টেনে আনি আমরা। সেই টেনে আনতে গিয়ে আরেকজন বীর উত্তম, যার কণ্ঠে স্বাধীনতার ঘোষণা এসেছিল তাকে আড়াল করার এই যে রাষ্ট্রীয় চেষ্টা, তাতে জিয়াউর রহমানের লাভ-ই হবে। কেননা, রাষ্ট্রীয়ভাবে যদি কোনো নেতার ঐতিহাসিক অবস্থান আর মর্যাদা আড়াল করা যেত, তাহলে বঙ্গবন্ধুকে আড়াল থেকে সম্মুখে আনা যেত না। ইতিহাস কখনও বেঈমানি করে না, যার যা অবস্থান তা তাকে পাইয়ে দেয়। সেটা এখন যারা বুঝে না, তারা তাদের মতোই নির্বোধ আর কুটবুদ্ধি সম্পন্ন, যারা একসময়, বঙ্গবন্ধুকে আড়াল করতে চেয়েছিল রাষ্ট্রীয়ভাবে।