ঢাকার মলগুলোর ঈদবিক্রি কমে অর্ধেক
জাফর আহমদ: লম্বা ৬ দিনের ঈদের ছুটি। মানুষ ছুটছে বাড়ির দিকে। গত দুদিনে ঢাকা প্রায় ফাঁকাই বলা যায়। ঈদের শেষ সময়ের কেনাকাটায় তাই লোক নেই। মার্কেটগুলোর বিক্রি অর্ধেকে নেমে গেছে। শুধু ঢাকায় যারা ঈদ করবেন, তারাই মার্কেটে আসছেন। রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মল, ইস্টার্ন প্লাজা, পলওয়েল মার্কেট ও রাফা প্লাজা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মলের নিচে দেখা গেছে, বিচ্ছিন্নভাবে দু-একজন করে প্রবেশ করছেন। অন্যদিন মার্কেটে প্রবেশের জন্য লাইন ধরে অপেক্ষা করতে হয়। গতকালের চিত্র ছিল উল্টো। মার্কেটের প্রধান প্রবেশপথে কোনো লাইন নেই, মার্কেটের নিচে গাড়ির অনেক বড় লাইন নেই। নিরাপত্তাকর্মীরা অলস সময় পার করছে। বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত এ চিত্র ছিল বসুন্ধরা সুপার মলের। মার্কেটের নিরাপত্তাকর্মী মলিন বলেন, অন্যদিন মার্কেটে প্রবেশের জন্য ক্রেতা ও ক্রেতাদের গাড়ি সামাল দিতে বেগ পেতে হয়। আজ তার চারভাগের একভাগও দেখা যাচ্ছে না। সাধারণ দিনের চেয়েও মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। ক্রেতা কম থাকায় শপিং মলগুলোর চলমান সিঁড়িও অনেকগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। দোকানিরা বলছেন, বিক্রি নেই দোকানের কর্মচারী ও মার্কেটের কর্মচারীদেরও ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নিউমার্কেট রাজধানীর জনপ্রিয় ও সবচেয়ে বড় মার্কেটগুলোর একটি। এ মার্কেটে উচ্চআয়ের মানুষ থেকে শুরু করে নিম্নআয়ের মানুষ সবাই কেনা-কাটা করতে যান। এবার এ মার্কেটেও ক্রেতার সংখ্যা ছিল কম। এমনকি সাধারণ দিনে এ মার্কেটে যে হারে মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়, এবার ঈদে তা দেখা যায়নি।
এ ব্যাপারে নিউ মার্কেটের কাপড়ের দোকানদার জাবেদ আলী বলেন, এবার ঈদে বিক্রি কম হয়েছে।
একই চিত্র ইস্টার্ন প্লাজা, রাপা প্লাজা, পলওয়েল সুপার মার্কেট ও বাইতুল ভিউ মার্কেটের। এসব মার্কেটের কয়েকটিতে ক্রেতা কমে যাওয়ার কারণে বৈদ্যুতিক সিঁড়ি ও লিফ্ট আংশিক বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব মার্কেটের দোকানদারের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, এবার কেনাকাটা খুবই কম। গতবছর কুরবানির ঈদে যে বিক্রি হয়েছে, এ বছর তার অর্ধেক বিক্রি হয়েছে। একই অবস্থা রাপা প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজা ও পুরানা পল্টনের বাইতুল ভিউ মার্কেটের।
বিক্রি কেন কমে গেছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বসুন্ধরা শপিং মল মালিক সমিতির সভাপতি এমএ হান্নান আজাদ বলেন, জঙ্গিহামলা মানুষের মাঝে ভীতির সৃষ্টি করেছে। এ ভীতি এখনো যায়নি- এমন হতে পারে। তার প্রভাব কেনাকাটায় পড়েছে বলে তার ধারণা। দোকান মালিক সমিতির এ নেতার মতে, বাজারে কেন বিক্রি কমেছে বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখতে পারে। কারণ, মানুষের মার্কেটে আসাই কমে গেছে।
বসুন্ধরা সুপারমলের লেভেল ৪-এ সৈকত ফেব্রিকসের নিরাপত্তাকর্মী রাজিব এ প্রতিবেদককে জানান, গত সপ্তাহে বেশি বিক্রি হয়েছে। গতকাল গ্রাহক কম ছিল। আজ আরও কম। দুপুর থেকে কোনো ক্রেতা দোকানে প্রবেশ করেনি। রাজিবের মতে, গতবছর কুরবানির ঈদে যে বিক্রি হয়েছিল, এবার তা হচ্ছে না। একে তো কুরবানির ঈদ, তারপর আবার ছুটি শুরু হয়ে যাওয়ার কারণে মানুষ ঢাকার বাইরে চলে গেছে বলে মনে করেন দোকান মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা ও এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলাল উদ্দিন। সম্পাদনা: বিশ্বজিৎ দত্ত