রাবি অধ্যাপক আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা ‘বিষক্রিয়ায়’ মৃত্যু ধারণা চিকিৎসকের
রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলির মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট দেখে বিষক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা চিকিৎসকের। গতকাল শনিবার বেলা দেড়টার দিকে শিক্ষক আকতার জাহানের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক এনামুল হক বলেন, ‘শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আমরা সন্দেহ করছি বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে। ভিসেরা পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠিয়েছি ঢাকায়। প্রতিবেদন এলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।’
শনিবার সকাল ১০টার দিকে শিক্ষক আকতার জাহানের ছোট ভাই, ভগ্নিপতি ও চাচাতো ভাইয়েরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান। তারপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে হিমঘর থেকে লাশ বের করা হয়। এ সময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের আবাসিক ভবন থেকে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আকতার জাহান জলিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
শনিবার বিকালে ওই শিক্ষকের ছোট ভাই কামরুল হাসান রতন মামলাটি করেন বলে মতিহার থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন। তিনি বলেন, নিহতের ছোট ভাই মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করে কেউ তার বোনকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে বলে অভিযোগ করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, মৃত্যুর পর আকতার জাহানের কক্ষ থেকে পুলিশ একটি চিরকুট উদ্ধার করে। ওই চিরকুটের সূত্র ধরেই আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা করা হয়েছে।
গতকাল বিকাল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে আকতার জাহানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ নিয়ে স্বজনেরা ঢাকার দিকে রওনা হন। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বনানী কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হবে।
গত শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত জুবেরী ভবনের ৩০৩ নম্বর কক্ষের দরজা ভেঙে অচেতন অবস্থায় শিক্ষক আকতার জাহানকে উদ্ধার করে পুলিশ। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ৩ দিন আগে থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিলেন তিনি।
আকতার জাহানের বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিজ বিভাগের সহকর্মী তানভীর আহমদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। তবে বছর চার আগে বিচ্ছেদ হয়। এরপর আকতার জাহান ওই কক্ষে একা থাকতেন। তাদের একমাত্র ছেলে আয়মান মহাখালীর ডিওএইচএসে নানাবাড়িতে থেকে ঢাকার একটি স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সম্পাদনা: প্রিয়াংকা