ঈদুল আজহা : গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ড. মুহাম্মাদ আজিবার রহমান
আদি পিতা আদম আ.-এর দুই পুত্র কাবিল ও হাবিলের দেওয়া কোরবানি থেকেই কোরবানির ইতিহাসের গোড়াপত্তন হয়েছে। তারপর থেকে বিগত সকল উম্মতের উপর এটা জারি ছিল। আমাদের উপর যে কোরবানির নিয়ম নির্ধারিত হয়েছে, তা মূলত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক শিশুপুত্র ইসমাঈল আ.-কে আল্লাহর রাহে কোরবানি দেওয়ার অনুসরণে ‘সুন্নাতে ইবরাহিমি’ হিসেবে চালু হয়েছে। মক্কা নগরীর জনমানবহীন ‘মিনা’ প্রান্তরে আল্লাহর দুই আত্মনিবেদিত বান্দা ইবরাহিম ও ইসমাঈল আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তুলনাহীন ত্যাগের যে দৃষ্টান্তস্থাপন করেছিলেন, বংশপরম্পরায় তারই স্মৃতিচারণ হচ্ছে ‘ঈদুল আযহা’ বা কোরবানির ঈদ। আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রকৃষ্ট নমুনা এই কোরবানিতে প্রতীয়মান।
পবিত্র কুরআনে কোরবানির বদলে ‘কুরবান’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। হাদিসেও ‘কোরবানি’ শব্দটি ব্যবহৃত না হয়ে এর পরিবর্তে ‘উযহিয়াহ’ ও ‘যাহিয়া’ প্রভৃতি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। আর এজন্যই কোরবানির ঈদকে ‘ঈদুল আজহা’ বলা হয়। ২ আরবি ‘কুরবান’ শব্দটি ফারসি বা উর্দুতে ‘কোরবানি’ রূপে পরিচিত হয়েছে, যার অর্থ ‘নৈকট্য’। আর পারিভাষিক অর্থে ‘কোরবানি’ ওই মাধ্যমকে বলা হয়, যার দ্বারা আল্লাহর নৈকট্য হাছিল হয়। প্রচলিত অর্থে ঈদুল আযহার দিন আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শারঈ তরিকায় যে পশু জবেহ করা হয়, তাকে ‘কোরবানি’ বলা হয়’। সকালে রক্তিম সূর্য উপরে ওঠার সময়ে ‘কোরবানি’ করা হয় বলে এই দিনটিকে ‘ইয়াওমুল আযহা’ বলা হয়ে থাকে। কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি ধর্মীয় ইবাদত। জিলহজ্জ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে এই ইবাদত পালন করতে হয়।
লেখক: কলামিস্ট ও বুদ্ধিজীবী
সম্পাদনা: আশিক রহমান