ভারতীয় গরুর আমদানি কম, দেশি গরুর দাম চড়া শেষ দিনের লাভের আশায় ক্রেতা বিক্রেতারা
দেলওয়ার হোসাইন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কুরবানির পশুর হাট জমে উঠেছে। গরু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এবার ভারতীয় গরু আমদানি কম হওয়ায় গতবারের চেয়ে বেশি দামে কুরবানির পশু কিনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতারা।
রাজধানীর গাবতলী, আফতাবনগর, নয়াবাজার, আগারগাঁও ও কমলাপুরের পশুর হাটগুলোয় গতকাল ঘুরে দেখা যায়, কুরবানির পশু যথেষ্ট এসেছে। দেশি গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরু, উট, দুম্বাও পাওয়া যাচ্ছে। তবে অনেক ক্রেতা অপেক্ষা করছেন আজ শেষ দিনে কম দামে গরু কেনার জন্য, আবার অনেক বিক্রেতা অপেক্ষা করছেন বেশি দামে বিক্রির জন্য। শেষ বেলার ক্রেতাদের আগমনে আজ বাজার চাঙ্গা হয়ে উঠবে বলে আশা করছেন ব্যাপারীরা।
ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতীয় গরু এসে পৌঁছলে দাম কমে যাবে। তখন গরু কিনবেন। বিক্রেতারা বলছেন, গতকাল পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু বেশি আসেনি। সীমান্তের ওপারে প্রায় ১৩ লাখ গরু আটকে রয়েছে। এগুলো ছাড় করলেও ঢাকায় এসে পৌঁছতে পারবে না। ফলে এবার ভারতীয় গরুর সরবরাহ ঢাকায় কম থাকবে। এ কারণে দাম বাড়তে পারে। সীমান্তে কড়াকড়ি ও চাঁদাবাজির কারণে গরু আমদানির খরচ বেশি হচ্ছে। প্রতিটি গরুর বিপরীতে গড়ে ২৫ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে।
তবে দেশি গরুর দিকেই ক্রেতারা ঝুঁকছেন বেশি। লোকজনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাওয়ায় ওষুধ দিয়ে মোটাতাজা করা গরুর চাহিদা কম। রাস্তাঘাটে এখনো চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ব্যাপারীরা।
বরিশাল প্রতিনিধি জানান, স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাটগুলোয় একচেটিয়াভাবে দেশি গরুর দখলে রয়েছে। এখন পর্যন্ত ভারতীয় গরুর তেমন একটা আমদানি না থাকায় দেশি গরুর আকাশছোঁয়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। গত বছর শেষ মুহূর্তে গরুর সংকট প্রকট হওয়ায় এবার অনেক ক্রেতা চড়ামূল্যেই আগেভাগে ক্রয় করছেন।
নাটোর প্রতিনিধি জানান, দেশি গরু ও খাসিতে ভরে গেছে জেলার ১৩টি পশুর হাট। ক্রেতা সংকটে ভুগছেন খাসি বিক্রেতারা। এদিকে ভারতীয় গরু যেন হাটে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কঠোর নজরদারি রেখেছে হাট কমিটি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, গতবারের চেয়ে এ বছর গরুর দাম বেশি। ষাঁড় বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে তিন লাখ টাকায়।
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি জানান, হাটে বিদেশি গরু তেমন একটা চোখে পড়েনি। ক্রেতা-বিক্রেতার প্রচুর সমাগম হলেও বেচাকেনা কম।
ব্যাপারীরা অভিযোগ করেছেন, গরু আনতে ঘাটে ঘাটে তাদের চাঁদা গুণতে হচ্ছে। উত্তরাঞ্চল থেকে একটি গরুভর্তি ট্রাক মির্জাপুর, টাঙ্গাইল এবং রাজধানীতে আনতে পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও হাটের ইজারাদারদের চাঁদা দিতে হচ্ছে, গরুপ্রতি ৫শ থেকে দেড় হাজার টাকা। আর ট্রাকপ্রতি চাঁদা ২০-৩০ হাজার টাকা। তবে হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশের দুই কর্মকর্তা এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ বছর রাস্তায় কোনো চাঁদাবাজি নেই। শ্রমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা কুরবানির ঈদকে ঘিরে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে মহাসড়কে চাঁদাবাজি করে থাকে।
সম্পাদনা: হাসিবুল ফারুক চৌধুরী