জঙ্গিদমনে সাহসিকতায় পুলিশের জন্য আসছে বিপিএম ও পিপিএম পদক
আজাদ হোসেন সুমন: রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে জঙ্গি হামলায় নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের রাষ্ট্রপতি পদক (বিপিএম) ও বাংলাদেশ পুলিশ পদক (পিপিএম) ভুষিত করার কথা ভাবছে পুলিশের সর্বোচ্চ মহল। তবে এখনো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। সিদ্ধান্ত হলে এই পদক জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য পুলিশ সপ্তাহ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ পদক প্রদান করবেন।
সরকারের নীতি নির্ধারক মহল সম্প্রতি পুলিশের জঙ্গিবিরোধী অভিযানে বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী নিজেও এ ব্যাপারে অত্যন্ত সন্তুষ্ট মনোভাব দেখান। সূত্রমতে গুলশান হামলার পর প্রধানমন্ত্রী আইজিপিকে ফোন করে গুলশানের হামলায় নিহত পুলিশ সদস্যদের ঈদ উপহার দেওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন এবং ৩ লাখ টাকা করে নগদ প্রদান করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সময় জঙ্গিবিরোধী অভিযানে আহতদের খোঁজ-খবর নেন বলে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সূত্রমতে ২৭ জুন গুলশান হামলায় নিহত গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল করিম ও বনানী থানার ওসি সালাউদ্দিন, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শেখ মারুফসহ আহত ২৭ পুলিশ সদস্য ১ জুলাই ঈদের দিন জঙ্গি হামলায় নিহত কনস্টেবল জহিরুল হক ও আনসারুল ইসলামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত ও আহত পুলিশ সদস্যদের দৃঢ়তা ও সাহসিকতার স্বীকৃতিস্বরুপ এ পদক দেওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে পুলিশ সদর দফতর। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিকভাবে আলোচনাও হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) হুমায়ুন কবীর বলেন, পদক দেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সাধারণত অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে হয়ে থাকে। তার আগে একজন অতিরিক্ত আইজিপির নেতৃত্বে পদক কমিটি করা হয়। ওই কমিটি এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কর্তব্য নিষ্ঠা, দেশাতাœবোধ, দৃঢ়তা ও সাহসিকতার স্বীকৃতি স্বরুপ এ পুরস্কার দেওয়া হয় বলে তিনি জানান।
জানাগেছে, অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের পদক সংখ্যা বেশি হবে। কারণ এবার ছিল ঘটনা বহুল। বিশেষ করে দেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠে। পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। জঙ্গিবিরোধী অভিযান ছাড়াও চোর, ছিনতাইকারী, ডাকাত, খুনিসহ বিভিন্ন অপরাধের ঘটনায় যারা সফলতার সাথে অভিযান পরিচালনা করেছে। তাদের মধ্যে থেকেও বাছাই করে পদক তালিকায় অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। বর্তমান আইজিপি একেএম শহীদুল হকও বিভিন্ন সময় জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান ও সাহসিকতার জন্য পুলিশের সর্বোচ্চ পুরস্কার বিপিএম এবং পিপিএম পুরস্কার পেয়েছেন। সূত্র জানায়, তিনি যখন চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তখন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর গাড়ি থামান। সালাউদ্দিন কাদের চাকরি খেয়ে দেবেন বলে হুঙ্কার দেন। এনিয়ে তর্কাতর্কি হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি কর্তব্য ও দায়িত্ববোধ থেকে পিছপা না হয়ে ওই গাড়ি চেক করেন এবং ২ টি আগ্নেয়াস্ত্রসহ সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ২ সহযোগীকে গ্রেফতার করেন। তার এই দৃঢ়তাপূর্ণ কর্তব্য দায়িত্ববোধে অবিচল থাকার বিষয়টি পুলিশে প্রায়শই ইতিবাচকভাবে আলোচিত হয়।