কড়া প্রহরায় আজিমপুরে ‘জঙ্গি বাড়ি’ আশপাশের দোকান পাট বন্ধ
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও মবিনুর রহমান : কড়া প্রহরায় রয়েছে আজিমপুরে ২০৯/৫ নম্বর জঙ্গি বাড়িটি। শনিবার রাত থেকে ওই বাড়ির আশপাশের দোকান পাট বন্ধ করে দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া ওই বাড়ির সামনে থেকে যাতায়াত করা অনেককে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে জঙ্গি নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতে দেখা গেছে। সকাল থেকে বাড়িটির সামনে উৎসুক মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বিডিআর ২ নম্বর গেটে দায়িত্বরত এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত কোনো দোকান খোলা যাবে না। তল্লাশিসহ প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে দোকান খুলতে দেওয়া হবে। অবশ্য গতকাল দোকানপাট বন্ধ থাকায় অনেক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা জানান, একদিন পরই ঈদ। দোকান খুলতে না পারলে কর্মচারীর বেতন কিভাবে দেবেন। তাছাড়া আসবাবপত্র, গ্রীল তৈরির দোকান ও টেলিভিশন সার্ভিসিংয়ের দোকানীরাও পড়েছেন বিপাকে। তারা জানান, আজ (রোববার) তাদের মাল ডেলিভারি দেওয়ার কথা। কিন্তু পুলিশ কোনো দোকানপাট খুলতে দিচ্ছে না। এ অবস্থা হলে মানুষের সঙ্গে দেওয়া ওয়াদাও রক্ষা করা যাবেনা বলে জানান দোকানীরা।
দেখা গেছে, আজিমপুরের ওই জঙ্গি আস্তানা ঘিরে কৌতূহলী মানুষের ভিড়। এক সময়ের বিজিবি ২ নম্বর গেট থেকে সোজা মেডিকেল স্টাফ কোয়ার্টারে যাওয়ার মাঝামাঝি স্থানে রাস্তার পূর্ব পাশের সরু গলিতে প্রবেশ পথে পশ্চিমমুখি বাড়িটির অবস্থান। বাড়িটি দেখতে অনেকটা বড় লঞ্চের মতো। সামনে কয়েকটি দোকান ও দারুল হুদা ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট নামে একটি মাদ্রাসা রয়েছে। গলির মুখে পুলিশ সদস্যরা বেঞ্চ পেতে বসে রয়েছেন। গলিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। অদূরে পুলিশের একটি বড় ও একটি ছোট ভ্যানগাড়ি রয়েছে। রাস্তা সংলগ্ন হওয়ায় যারাই এ পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন তারা খানিকটা থেমে বাড়িটি দেখছিলেন। কেউ আবার নিশ্চিত হতে পুলিশকে জিজ্ঞাসা করছিলেন।
আবদুর রহিম নামের স্থানীয় বাসিন্দা জানান, শনিবার রাতে গোটা এলাকায় কারফিউর মতো পরিস্থিতি ছিল। চারদিকে অসংখ্য পুলিশ অবস্থান করছিল। বাসা কাছাকাছি হলেও অভিযানের সময় বাসায় প্রবেশ করতে পারেননি। রাত ১১টায় বাসায় ঢোকেন।
এর আগে, গত ২৭ আগস্ট নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায় একটি বাড়ির তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে অভিযানে কানাডাপ্রবাসী তামিম চৌধুরী ও তার দুই সহযোগী নিহত হন। ২৬ জুলাই কল্যাণপুরে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানে ৯জন নিহত হন। সেখানে আহত অবস্থায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়া গত ১ জুলাই রাতে পাঁচ জঙ্গি গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলা চালায়। তারা দেশি-বিদেশি ২০ নাগরিককে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ওই রাতে অভিযানে নিহত হন পুলিশের দুজন কর্মকর্তা। পরদিন সকালে সেনা অভিযানের মধ্যদিয়ে জঙ্গিদের ১২ ঘণ্টার জিম্মি সংকটের অবসান হয়। অভিযানে পাঁচ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হয়। সম্পাদনা: আজাদ হোসেন সুমন