আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ঢাকার ‘রক্তনদী’
মোরশেদ: যেন রক্তের নদী। ঈদুল আজহায় পশু কুরবানির সময় বৃষ্টি হওয়ায় জলাবদ্ধতায় পশুর রক্ত মিশে যেন তৈরি হলো ‘রক্তনদী’। মঙ্গলবার ঠিক এ রকম দৃশ্য দেখেছে রাজধানীবাসী।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে গুরুত্বের সঙ্গে। ঢাকার ‘রক্তনদী’ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সিএনএন, বিবিসি, গার্ডিয়ান, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এবিসি নিউজ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইন্ডিয়া টুডে, আনন্দবাজার পত্রিকা, জিনিউজসহ বেশকিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। ওইসব প্রতিবেদনে ঢাকায় এ পরিস্থিতির জন্য কর্তৃপক্ষীয় অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনের সঙ্গে ঢাকার বিভিন্ন সড়কের রক্তাক্ত ছবিও ছাপা হয়।
‘ঢাকায় রক্তের নদী’ শিরোনামে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদুল আজহা উদযাপনের সময় এক অদ্ভুত কা- দেখল ঢাকাবাসী। প্রবল বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় পশুর রক্ত মিলে যা তৈরি হলো, তা এককথায় ‘রক্তনদী’।
‘পশুর রক্তে একাকার’ শিরোনামে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদের দিন সকালেই বৃষ্টি নামে মুষলধারে। ভিজে ভিজে জামাতে অংশ নেন মুসল্লিরা। রাজপথ, অলিগলি, এমনকি কুরবানির জন্য রাখা নির্দিষ্ট জায়গাগুলোও বৃষ্টির পানিতে সয়লাব হয়ে যায়। এর মধ্যেই বৃষ্টিতে ভিজে পশু জবাই করতে হয়েছে। আর পশুর রক্ত বৃষ্টির পানিতে মিশে রাজধানীর কোথাও কোথাও ‘রক্তনদী’র রূপ ধারণ করে। রক্তাক্ত পানিতে সয়লাব হয়ে যায় রাজপথ।
বিবিসির খবরেও ‘ঢাকার রক্তনদী’ সংক্রান্ত বিবরণ হাজির করে এর কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে। ‘ঈদে ঢাকায় রক্তনদী কেন’ শিরোনামের সেই প্রতিবেদনে কয়েকটি ধাপে এ ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করা হয়েছে। প্রতিবেদনের প্রথমাংশে ‘কী ঘটেছে’ উপ-শিরোনামে বলা হয়েছে, ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা খুবই দুর্বল হওয়ার কারণে ভারি বর্ষণ হলেই ঢাকা স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকার হয়। বিবিসির প্রতিবেদনের পরবর্তী অংশে মুসলমান সম্প্রদায়ের পশু কুরবানি নিয়ে ধারণা দেওয়া হয়েছে। এরপর, আগে কখনও ঢাকায় এমন রক্তনদী-পরিস্থিতি হয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখার চেষ্টা করেছে বিবিসি। সেই অংশে তারা দেখিয়েছে, বরাবরই ঢাকার রাস্তায় পশু কুরবানি দেওয়ার চল থাকলেও অতীতে কখনও রাস্তাগুলো রক্তনদীতে পরিণত হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবারের ঈদুল আজহার দিনে বৃষ্টি ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার ভয়াবহতাকে সামনে এনেছে।
প্রায় সব প্রতিবেদনে অভিযুক্ত করা হয়েছে সিটি কর্পোরেশনকে। অনেক সংবাদমাধ্যম কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের বক্তব্যও নিয়েছে। তারা দাবি করেছেন, আসলে পশু কুরবানির জন্য স্থান নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। শহরবাসীকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, এ নিয়ে তেমন কোনো প্রচার-প্রচারণা ছিল না। কেউ কেউ আবার নির্ধারিত স্থান ব্যবহার না করার কারণ হিসেবে বৃষ্টিকেও দায়ী করেছেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম