অসুস্থ থেকে তরতাজা হিলারি আসল কে?
বিশ্বজিৎ দত্ত: যিনি ৯/১১ সন্ত্রাসের ‘গ্রাউন্ড জিরো’য় ঈষৎ অচেতন হয়ে গাড়িতে উঠেছিলেন এবং তার কয়েক ঘণ্টা পরই যিনি মেয়ে চেলসির বাড়ি থেকে ক্যামেরার সামনে হাত নাড়তে নাড়তে সহাস্যে বেড়িয়ে এসেছিলেন, তারা কি আদতে একই মহিলা? সোস্যাল মিডিয়ায় এ প্রশ্নের মুখে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিলারি ক্লিনটন। জল্পনা চলছে, গত পরশু চেলসির বাড়ি থেকে যিনি বেরিয়েছিলেন, তিনি সম্ভবত টেরিজা বার্নওয়েল! দুজনের চেহারা যমজসদৃশ!
হিলারির অসুস্থ হয়ে পড়া এবং তার ঘণ্টা দুই পরে মেয়ের বাড়ি থেকে ‘তাঁর’ বেরোনোর একাধিক ছবি পাশাপাশি ফেলে তাদের পার্থক্য বোঝানোর চেষ্টা চলছে সংবাদপত্র এবং সোস্যাল মিডিয়ায়। ব্রিটেনের একটি ট্যাবলয়েডে প্রকাশিত দুটি ছবির একটিতে দেখা গেছে, এক হিলারির চিবুকের হাড়ের গঠন ‘অন্য’ হিলারির চেয়ে বড়! পার্থক্য রয়েছে ‘দুজনের’ গ্রীবার ত্বকেও। একটি ছবিতে ঝুলে পড়া ত্বক অন্য ছবিতে মসৃণ! ‘দুজনই’ হুবহু এক রকমের স্যুট পরে থাকলেও একজনের পেটের আয়তন এবং কোটের ঝুল পৃথক।
প্রশ্ন উঠেছে, মাত্র দুই ঘণ্টার ব্যবধানে একজনের চেহারা কি এতটা বদলে যেতে পারে। আগের এবং পরের হিলারির কানের স্টাডের পার্থক্য দেখেও বিস্মিত অনেকে। পোশাক, সানগ্লাস, ব্যাগ, জুতো প্রভৃতি আপাতদৃষ্টিতে এক থাকলেও কেন পাল্টাল কানের স্টাড? বিশেষ করে অতটা অসুস্থ হয়ে পড়ার পরে কি কেউ সর্বাগ্রে কানের স্টাড পাল্টাতে ব্যাগ্র হয়ে পড়েন?
এ পরিস্থিতিতেই বারবার উঠে আসছে টেরিজার নাম। প্রশ্ন উঠেছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে নিজের প্রকৃত শারীরিক অবস্থা আড়াল করতেই কি টেরিজার ‘সাহায্য’ নিয়েছেন আমেরিকার প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি। কারও কারও মতে, অসম্ভব নয়। প্রতিপক্ষ ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে হিলারির ‘দুর্বল’ স্বাস্থ্যকে নির্বাচনের বিষয় করে তুলেছেন, তার মোকাবিলায় কৌশলগতভাবে ‘বডি ডাবল’ ব্যবহার করা হিলারির পক্ষে খুবই স্বাভাবিক।
পেশাগতভাবে বিজ্ঞাপন দুনিয়ার সঙ্গে যুক্ত টেরিজার হিলারিসদৃশ চেহারা দীর্ঘদিন ধরেই চর্চায় রয়েছে। শোনা যায়, ১৯৯৩ সালে বিল ক্লিনটন প্রথমবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর নিজের সঙ্গে হিলারির চেহারার সাদৃশ্য আরও বাড়িয়ে নিয়েছিলেন টেরিজা। হিলারিকে নকল করবেন বলে বিজ্ঞাপন সংস্থার চাকরিও ছাড়েন। ১৯৯৬ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি বই সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে দুজনের সাক্ষাতের ছবিও রয়েছে।
গত প্রায় দুই দশক ধরে হিলারির পেশাদার নকল হিসাবে কাজ করেন টেরিজা। হিলারির চেয়ে সাত বছরের ছোট তিনি। বয়স এখন ৬১। আমেরিকার একটি ওয়েবসাইটের দাবি, হিলারি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচার শুরুর পর বিভিন্ন টেলিভিশন শো’য়ে, অনুষ্ঠানে তাকে নকল করে টেরিজা নিজের উপার্জনও বাড়িয়েছেন। হিলারি সেজে মাসে ১০ হাজার ডলারের বেশি আয় করছেন। টেরিজা অবশ্য বরাবরই দাবি করেন, তিনি হিলারি সাজলেও আসল হিলারির সঙ্গে তার এখনো পর্যন্ত একবারই দেখা হয়েছে।
নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হিলারি তার স্বাস্থ্য নিয়ে এহেন চর্চায় উদ্বিগ্ন। বলেছেন, ‘আমার স্বাস্থ্য নিয়ে এত আলোচনা হবে, ভাবিনি।’ টেরিজা অবশ্য জল্পনায় ঠা-া জল ঢেলে জানিয়েছেন, তিনি এই মুহূর্তটার জন্যই চুপচাপ অপেক্ষা করছিলেন! গতরাতে তিনি টুইট করেছেন, ‘শান্ত হন। আমি আজ সারাদিন লস অ্যাঞ্জেলেসে ছিলাম, নিউ ইয়র্ক সিটিতে নয়। আপনাদের মস্তিষ্কতো ষড়যন্ত্রে ঠাসা! মজা লাগছে। এবার ঘুমোতে যান’। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি