আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই বার্ন ইনস্টিটিউট উদ্বোধন
রিকু আমির: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই এবং অপারেশন দিয়ে রাজধানীর চাঁনখারপুলে নির্মাণাধীন ৫০০ শয্যার জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট উদ্বোধন করা হবে। যার নির্মাণ কাজ গত ৬ এপ্রিল উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, ‘হিসাব অনুযায়ী ২০১৯ সালে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জোর আশা করছি- ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত দিয়েই এটি উদ্বোধন করাতে পারব। উদ্বোধনের প্রথম কাজটিই হবে অপারেশন করা’।
বিশ্বমানের এই ইনস্টিটিউটের সঙ্গে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসার জন্য থাকবে ৫০০ শয্যার হাসপাতালে। চাঁনখারপুলে ১ দশমিক ৭৬ একর জমিতে এই ইনস্টিটিউট নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায় এ প্রকল্প।
বার্ন ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল নির্মিত হচ্ছে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে। দুই তলা বেজমেন্টসহ মোট ১২ তলা ভবন হবে তিনটি ব্লকে। একটি ব্লকে বার্ন, একটিতে প্লাস্টিক ও অন্যটিতে একাডেমিক ভবন হবে।
বর্তমানে এর নির্মাণ কাজ মধ্য পর্যায়ে রয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ডা. সামন্তলাল সেন বলেন, ‘নামকাওয়াস্তে উদ্বোধন করতে চাই না। শুধু সুন্দর ভবন দেখাব? এমন প্রবণতা নেই। কাজের জন্য এটা করা হচ্ছে, কাজ দিয়েই এর যাত্রা করা হবে’।
দেশে প্রতিবছর গড়ে ৬ লাখ মানুষ বিভিন্নভাবে দগ্ধ হন। তাদের চিকিৎসার জন্য কমপক্ষে দেড় হাজার ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ সার্জন প্রয়োজন হলেও বর্তমানে মাত্র ৫২ জন সেই সেবা দিচ্ছেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বর্তমানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিষয়ে স্নাতকোত্তর এবং মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) এফসিপিএস ডিগ্রি দিলেও সেই উচ্চ শিক্ষার সুযোগ খুবই সীমিত। এই ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু হলে প্রতিবছর গড়ে ১০ থেকে ১২ জন চিকিৎসক এ বিষয়ে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ পাবেন।
১৯৮৬ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে ছয়টি বেড নিয়ে বার্ন বিভাগ চালু করেন দেশের প্রথম প্লাস্টিক সার্জন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অধ্যাপক সামন্ত লালের চেষ্টায় ২০০৩ সালে সেটি ৫০ বেডের পূর্ণাঙ্গ ইউনিট হিসেবে কাজ শুরু করে।
২০১০ সালের ৩ জুন পুরান ঢাকার নিমতলীতে ভয়াবহ অগ্নিকা-ে ১২৭ জনের মৃত্যুর পর বার্ন ইউনিটের সক্ষমতা আরও বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পায়। এ ইউনিটের বেড বেড়ে প্রথমে ১০০ ও পরে ৩০০ হয়। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বর্ষপূর্তি ঘিরে বিএনপির আন্দোলনের মধ্যে দেশজুড়ে পেট্রোল বোমায় দগ্ধ হাজার হাজার রোগী এই বার্ন ইউনিট থেকেই চিকিৎসা নেন। সম্পাদনা: সুমন ইসলাম