ঈদের ছুটি শেষ, কিন্তু উপস্থিতি কম চাঞ্চল্য ফিরবে রোববার
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: ঈদের ছুটি শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে অফিস, আদালত, ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তবে উপস্থিতি ছিল কম। আজ শুক্রবার ও কাল শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় এখনো অনেকেই ঢাকায় ফিরে আসেনি। কেউ কেউ ঈদের ছুটির সঙ্গে একদিনের ছুটি বাড়িয়ে নিয়েছেন। আবার কেউবা না জানিয়েও রয়েছেন অনুপস্থিত।
গতকাল সচিবালয়ে ও সরকারি অফিসে বিরাজ করে ঈদের আমেজ। যারা অফিসে গেছেন তাদের বেশিরভাগই কাজের ফাঁকে ফাঁকে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও গল্প করে সময় কাটিয়েছেন।
ব্যাংকগুলো খুললেও সেখানে উপস্থিতি ছিল কম। সাউথইস্ট ব্যাংকের কাওরান বাজার শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানকার ম্যানেজার ঈদ শুভেচ্ছা শেষ করে অফিসের সিনিয়র কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী বৈঠক করছেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকের পান্থপথ শাখায় দেখা এরপর পৃষ্ঠা ৭, কলাম
(শেষ পৃষ্ঠার পর) যায়, সেখানে হাতেগোনা কয়েকজন গ্রাহক আসছেন। কেউ আসছেন নতুন টাকার নোট নিতে। কেউ টাকা জমা দিতে, কেউবা তুলতে।
এদিকে অফিস আদালত খুললেও ঢাকার রাস্তাঘাট এখনও ফাঁকা। বাস সার্ভিসগুলো অন্য সময়ের চেয়ে কম যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছে। যাত্রীরা যে যেখানে নামতে চেয়েছেন সেখানে নামিয়ে দিয়েছেন। অন্য সময়ে কাউন্টার ছাড়া নামাতে পারবেন না বলে বাস সার্ভিসের হেলপারদের যে মনোভাব থাকে বৃহস্পতিবার তা ছিল না।
সিএনজি চালিত অটোরিক্সার বেশিরভাগই চলাচল করেছে মিটারের চেয়ে ২০-৩০ টাকা বেশিতে। ছুটির আমেজ থাকায় রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের তেমন কোনো কড়াকড়ি ছিল না। নগরীর বড় বড় রাস্তায় রিকশা চলাচল করেছে। অন্যান্য যানবাহনও ছিল কম।
অফিসে উপস্থিতি কম থাকলেও ব্যাপক উপস্থিতি ছিল সঞ্চয়পত্র কেনা ভাঙ্গানো ও লভ্যাংশ তোলার ব্যাপারে। জিপিওতে এই জন্য গ্রাহকদের লাইন ছিল অনেক বেশি। জিপিও গিয়ে দেখা যায়, সেখানে আল আমীন নামে একজন এসেছেন পরিবার সঞ্চয়পত্র কেনার ফরম নিতে। তার কাছে জানতে চাইলে বলেন, কিছু টাকা জমেছে। তাই দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনব। তাই আজকে ফাঁকা মনে করে আসলাম। কিন্তু ভিড় বেশ ভালো। তিনি বলেন, আমি দুটি ফরম চাইলাম আমাকে দেওয়া হলো না। কাউন্টারের ওই ফরম দাতার কাছে এই ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রের ফরম কম। তাই একজনকে একটাই দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়াও অনেকেই এসেছেন পাঁচবছর মেয়াদী সঞ্চয়পত্র, পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশন সঞ্চয়পত্রসহ বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্রের তিন মাস অন্তর অন্তর মুনাফা তুলতে। এমনই একজন বলেন, ঈদের শেষে হাতে টাকা নেই। তাই এখন সঞ্চয়পত্রের টাকা তুলে নিয়ে মাসের বাকি কয়েকদিন চলতে হবে। তবে পোস্ট অফিসের অন্যান্য কাউন্টারগুলোতে তেমন ভিড় ছিল না। প্রাইজবন্ড কিনেছেন কেউ কেউ। কেউবা ডাক জীবন বীমার টাকা দিয়েছেন। বিদেশে মালামাল প্রেরণ ও ডকুমেন্ট প্রেরণের ক্ষেত্রেও ইএমএস কাউন্টারে ভিড় ছিল না। এদিকে ছুটির দিন না হলেও গতকাল দুপুর থেকেই শিশু পার্কে দর্শনার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। অনেক অভিভাবক তাদের শিশুদেরকে ঈদের আনন্দ দিতে পার্কে আসে। সেখানে দুপুর একটার পর থেকেই ভিড় জমতে থাকে। শিশুপার্কের গেট থেকে শাহবাগ ফুলের মার্কেট পর্যন্ত লম্বা লাইন হয়ে যায়।
ঢাকার রাস্তাঘাট আগামী রোববার থেকে ব্যস্ত হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে ফিরবে প্রাণচাঞ্চল্য। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম