মৌসুমী ব্যবসায়ীরা জিম্মি কুরবানির পশুর চামড়া নিয়ে নৈরাজ্য নেপথ্যে স্ট্রংসিন্ডিকেট
আজাদ হোসেন সুমন: কুরবানির পশুর চামড়া নিয়ে নৈরাজ্য চলছে রাজধানীর পাইকারী চামড়া বাজার পোস্তা ও হাজারীবাগের ট্যানারি পল্লীতে। ট্যানারি মালিকদের সমন্বয়ে গড়া একটি সিন্ডিকেট এই চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। সাধারণ চামড়া বিক্রেতারা এই নৈরাজ্যের কবলে পড়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা পথে বসার উপক্রম হয়েছে। অবশ্য ট্যানারি মালিক সমিতি দাবি করেছে- নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি মূল্যে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনেছে ফলে যার মাশুল হিসেবে তাদের লোকসান গুনতে হবে-এক্ষেত্রে কারো কিছু করার নেই।
আল আমিন নামে এক মৌসুমী ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, আড়তদারেরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আমাদের কাছ থেকে নির্ধারিত দামের চেয়ে কমে চামড়া কিনছে। তিনি বলেন, ১৮ বর্গফুট একটি পশুর চামড়া ৮০০ টাকায় কিনেছি। কোনো কোনো চামড়া গড়ে ২০০০ হাজার টাকা দরে কিনেছি। এখন এসব চামড়া ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতে না পারলে ব্যাংক থেকে উচ্চ সুদে ঋণ করে চামড়া কিনে আর্থিক সংকটের কবলে পড়তে হবে আমাদের। তিনি আরও বলেন, আমরা চামড়ার জন্য যে পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করেছি, চামড়া বিক্রি করতে দেরি হলে আমাদের পুরো টাকাই লোকসান হবে।
আবদুস সালাম নামের আরেক মৌসুমী ব্যবসায়ী জানান, আনুমানিক ২৫ বর্গফুট হবে এমন ৪টি চামড়া গড়ে ২ হাজার টাকা করে কিনেছি। সরকারি দাম ফলো করা হয়েছে। চামড়ায় যে বিনিয়োগ করেছি, সে অনুসারে আড়ৎদারেরা চামড়া কিনতে রাজি নন।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বিভিন্নস্থান থেকে বেশি দামে চামড়া কিনছে। তারা একদিকে চামড়ার সিলেকশন বোঝে না, অপরদিকে, স্কয়ার ফিট না বুঝে পশুর চামড়া কিনেছে। তাই আড়ৎদারদের দোষারোপ করছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের এ বছর প্রায় ১ কোটি পশুর চামড়া আমদানি করার টার্গেট আছে। তবে আমরা রাজধানী থেকে প্রতি বর্গফুট ৫০ টাকা এবং রাজধানীর বাইরে থেকে ৪০ টাকা দরে পশুর চামড়া কিনবো।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে যারা চামড়া কিনবে তাদের দায়ভার সংশ্লিদেরই নিতে হবে বলে জানান তিনি। সূত্র জানায়, সাভারের হেমায়েতপুরের ট্যানারি কারখানাগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ। অভিযোগ রয়েছে কুরবানি ঈদ এলে হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে সিন্ডিকেটের। এ ব্যাপারে কারো কোনো হস্তক্ষেপ চোখে পড়ে না। ফলে তারা যাচ্ছে তাই করে বলে মাঠপর্যায়ের ভুক্তভোগিরা জানান। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম