‘৭৫ শতাংশ জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে’
আজাদ হোসেন সুমন: একদিকে র্যাব পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর এ্যাকশন অন্যদিকে দেশে জঙ্গিবাদবিরোধী জনসচেতনতায় জঙ্গিরা পড়েছে মহা বেকায়দায়। যেখানেই আস্তানা সেখানেই পুলিশের অভিযান। মানুষ পুলিশকে তথ্য দিয়ে, অভিযানে সহায়তা করে। এ অবস্থায় জঙ্গিরা নিজেদের গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, জনগণের সহায়তায় পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা দেশ থেকে শতকরা ৭৫ ভাগ জঙ্গি নির্মূল করতে সক্ষম হয়েছে।
শহীদুল হক বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উংঠে নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে। কিন্তু গুলশানের ঘটনাটি ছিল আমাদের জন্য এ্যালার্মিং। তাই বসে থাকিনি। পুলিশ বাহিনীর দেশপ্রেমিক ও অকুতোভয় সৈনিকেরা, শোলাকিয়ায়, কল্যাণপুরে, মিরপুরের রুপনগর ও নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সফল অভিযান পরিচালনা করে। পুলিশি অভিযানে বাঘা বাঘা জঙ্গি নেতা ধরাশায়ী হয়। এসব অভিযানে পুলিশ বাহিনীর বেশ ক’জন সদস্য নিহত ও বহু সদস্য আহত হয়। আমি পুলিশ প্রধান হিসেবে গর্ববোধ করি অকুতোভয় সৈনিকের মত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা নিজের জীবন দিয়ে এবং ঝুঁকি নিয়ে জঙ্গিদের মোকাবিলা করেছে এবং করছে। আইজিপি বলেন, পুলিশ নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে বলেই জনগণ এখন জঙ্গিদের ব্যাপারে পুলিশকে তথ্য দিচ্ছে। গোয়েন্দাদের পাশাপাশি জনগণের তথ্যে অনেক জঙ্গি ধরাও পড়ছে। জনগণের এ আগ্রহ দেখে জঙ্গিরা ভয় পাচ্ছে। তারা পালিয়ে বেড়াচ্ছে। দেশে জঙ্গি নেটওয়ার্ক জনগণের সহায়তায় পুলিশ অন্তত ৭৫ শতাংশ গুড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। গতকাল মুঠোফোনে তিনি এসব কথা বলেন।
জানাগেছে, ২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার রাতে মিরপুরের রূপনগরে জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ। জঙ্গি নেতা মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম বাসায় আসামাত্র দরজায় তালা লাগিয়ে পুলিশে খবর দেন ওই বাড়ির মালিক আব্দুল গণি।
২৬ জুলাই কল্যাণপুরের জাহাজ ভবনে জঙ্গিদের সন্ধান দেয় স্থানীয় লোকজন। পরে পুলিশের অভিযানে ৯ জঙ্গি নিহত হয়। ১৯ আগস্ট মেরুল বাড্ডার ইসলামিক ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে অভিযান পরিচালনা করে ১৮ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ খবরটিও পুলিশকে জানিয়েছিলেন স্থানীয় এক বাসিন্দা। এছাড়া দেশের বিভিন্নস্থানে সন্দেহভাজন নারী-পুরুষ ও জঙ্গি আস্তানার সন্ধান দিচ্ছে স্থানীয় জনতা। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ শুধু পুলিশের অভিযান ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে দমন করা সম্ভব নয়। এ কারণে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সামাজিক সংগঠন, বিভিন্ন এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সুশীল সমাজের লোকজনের সঙ্গেও জনসচেতনতা মতবিনিময়, সভা-সেমিনার, গণসঙ্গীত, মঞ্চ নাটক হচ্ছে। জঙ্গিবাদ নিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের বিতর্ক অনুষ্ঠান করছে পুলিশ সদর দফতর।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার মুঠোফোনে বলেন, সম্প্রতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠা জঙ্গিবাদের নেপথ্যে জামায়াতে ইসলামী ছাত্র শিবিরের ইন্ধন রয়েছে। জামায়াতকে রাজনীতি ও সামাজিকভাবে নির্বাসিত না করা পর্যন্তÍ শুধু পুলিশি অভিযান পরচিালনা করে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা দুরুহ ব্যাপার। শেকড়ের সন্ধান না পেলে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।