এক বছর পর সাবধানতার সঙ্গে ঈদ উদযাপিত হলো বিশারায়
ইমরুল শাহেদ: গত বছর দাদরির বিশারা গ্রামে বকরী ঈদে গরু জবাই ও গোশত বিতরণ করার গুজবে ৫০ বছর বয়স্ক মোহাম্মদ আখলাককে গণপিটুনিতে হত্যা করা হয়। সেই মৃত্যু বিশারা গ্রামের নিয়ম-নীতি পুরোপুরিভাবে বদলে দেয়। সেই গ্রামে ৩০টি মুসলিম পরিবার বাস করে। এ বছর সেখানকার ঈদগাহ পাহারা দেয় পুলিশ। ঈদগাহটিতে বিশারা ও আশপাশের গ্রামের লোকেরা ঈদের জামাতে মিলিত হয়। পুলিশ পাহারা বসেছিল যাতে সেখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে। গৌতমবুদ্ধ নগর জেলার প্রশাসক দুই মাস আগেই জেলাটির কিছু কিছু অংশে ১৪৪ ধারা জারি করে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, এটা তারা নিয়ম মাফিক করে থাকে। শিবরাত্রি থেকে বকরী ঈদ পর্যন্ত যেকোনো উৎসবেই তারা এটা করছে। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে বিশারার ঘটনাটি ও সংঘর্ষের কথা বলে থাকে। মঙ্গলবার যারা ঈদের নামাজ পড়তে ঈদগা ময়দানে সমবেত হয়েছেন, তারা বলেছে পরিস্থিতি একেবারেই স্বাভাবিক। তারপরেও তারা এ ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে। বিশারা গ্রামের শালীন আহমেদ বলেছেন, ‘গত বছরের ঈদ থেকে এ পর্যন্ত অনেক ঘটনাই ঘটেছে। গ্রামটির কিছু লোক মনে করে, তারা ভুল করেছে, কিছু লোক মনে করে তাদের ছেলেমেয়েরাতো নিষ্পাপ এবং তাদের মনে এ ঘটনা গেঁথে গেছে। এই পরিস্থিতিতে কারোরই উচিত হবে না এমন কিছু করা যাতে টেনশন বাড়বে।’ পাশের একটি গ্রামের ইমাম হলেন মোহাম্মদ দাউদ। তিনি ঘটনার পর বিশারা গ্রামের মসজিদে চলে এসেছেন গত ডিসেম্বর মাসে। তিনি বলেন, ‘গত বছর পর্যন্তও আমি জীবনে কোনোদিনই এ ধরনের কোনো ঘটনা দেখিনি। বহু বছর থেকেই এখানে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছে। আমরা জানি না সেদিন রাতে কী ঘটেছিল। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, কিছু অসামাজিক লোকজন সামাজিক ভারসাম্য নষ্ট করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমাদের ছেলেমেয়েদের এসব থেকে সাবধান থাকতে হবে।’
ঘটনার কিছুদিন পর আখলাকের পরিবার বিশারা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। মঙ্গলবার দিন বিকালে দাউদের কাছে একটি ফোনকল আসে। ফোন করেছেন আখলাকের ভাই মোহাম্মদ আফজাল। তিনি ঈদযাপন সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। আফজাল বলেন, ‘আমি শুধু জানতে চেয়েছি বিশারা গ্রামে আমার ভাইয়েরা কেমন আছে। তারা কিভাবে ঈদ উদযাপন করেছেন।’ তার ভাষায় ‘ঈদ কে দিন ঘর কি ইয়াদ তো আয়েগী।’ সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস