দ্রুত সময়ে কুরবানির বর্জ্য অপসারণ সন্তুষ্ট রাজধানীবাসী
ফয়সাল খান: রাজধানীর দুই সিটি কর্পোরেশন নির্ধারিত সময়ের আগে কুরবানির বর্জ্য অপসারণ করায় সন্তুষ্ট নগরবাসী। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলে নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত কয়েক বছরের মধ্যে ঈদের পর কুরবানির পশুর বর্জ্যরে দুর্গন্ধে ফাঁকা রাজধানীতে ঈদ পরবর্তী আনন্দ ম্লান হয়ে যেত। সেই তুলনায় দুই মেয়রের ঘোষণা অনুযায়ী ৪৮ ঘণ্টার পূর্বে কুরবানির বর্জ্য অপসারণ করায় এবারের ঈদ পরবর্তী আনন্দে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন নাগরিকরা। সিটি কর্পোরেশন বলছে, পরবর্তী সময়ে নতুন কুরবানিসহ ছোটখাট ময়লা খুঁজতে কর্মকর্তারা পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এখনো দিন-রাত বিভিন্ন এলাকায় কাজ করে যাচ্ছেন।
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা শাকিল জানান, প্রতিবছর ঈদের পর এক সপ্তাহ ধরে রাস্তা-ঘাটে চলাফেরা করা যেত না। এবার ঈদের দিন-রাত থেকেই রাস্তা ঘাট পরিষ্কার। নারিন্দা এলাকার আমিনুল জানান, ঈদের পরে দুর্গন্ধ থাকলে ঘুরাঘুরি করা যায় না, এমনকি বাসায় থাকাও মুশকিল হয়ে যেত। এবার রাস্তা-ঘাট অন্যবারের তুলনায় বেশ পরিষ্কার। মিরপুর এলাকায় সজিব সাদিক জানান, মিরপুরের প্রায় সব এলাকার বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। আমরা খুব স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটাচলা করতে পারছি। এসময় নাগরিকরা দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণের জন্য মেয়রদেরকে ধন্যবাদ জানান।
দুই মেয়রকে ধন্যবাদ জানিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ ইকবাল হাবীব আমাদের অর্থনীতিকে জানান, দ্রুত সময়ে বর্জ্য অপসারণ অবশ্যই প্রসংশার দাবি রাখে। তবে আত্মতৃপ্তিতে না ভোগে নাগরিক সমস্যা সমাধানে মেয়রদেরকে আরও মনোযোগী হতে হবে বলে মনে করেন এই স্থপতি।
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) সূত্র জানায়, ডিএনসিসি এলাকায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৫টি পশু কুরবানি করা হয়েছে। এসব জবাইকৃত পশুর ৮ হাজার টনের বেশী বর্জ্য আমিনবাজারের ল্যান্ডফিলে অপসারণ করা হয়েছে। পক্ষান্তরে প্রায় ২০ হাজার টন বর্জ্য অপসারণ করে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। দুই সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রায় ১৩ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী নিয়োজিত ছিলেন। প্রায় ২ শতাধিক কর্মকর্তা দিন-রাত কাজ করেছেন। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের যান্ত্রিক ব্যবহারের ৩২৫টি আধুনিক বর্জ্যবাহী ট্রাক, ৬৯টি ডাম্পার, ২০টি পেলোডার, ১০টি টায়ার ডোজার, ৫টি প্রাইম মুভারসহ সেনা, নৌ বাহিনীর কিছু যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়েছে। তবে দুই মেয়রের কৃতিত্ব দিয়েছেন নগরবাসীকে।
ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক বলেন, এ কৃতিত্ব নগরবাসীর। নগরবাসী সচেতন না হলে এ কাজ সম্ভব হত না। পরিচ্ছন্নকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কর্পোরেশনের কর্মকর্তরা ছুটির মধ্যেও দিন রাত কাজ করেছেন উল্লেখ করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মেয়র। নাগরিকদেরকে সচেতন করার জন্য মিডিয়া কর্মীদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা ছিল উল্লেখ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, এ বছর কুরবানির বর্জ্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের ঘোষণা দিয়েছিলাম নির্দিষ্ট সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগেই বর্জ্য অপসারণ সম্ভব হয়েছে এ কৃতিত্ব নগরবাসীর। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা