রফিক আহমেদ : বাম দলের নেতারা রামপালে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অনড়। সরকার যাতে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করতে যাতে না পারে সেজন্য আন্দোলন চালিয়ে যাবে বাম দলসহ বিভিন্ন দলের নেতারা। গতকাল শুক্রবার বাম দলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা এ কথা জানান।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পে যে ক্ষতি হচ্ছে- এটা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নীতিনির্ধারক মহল এখন পরিষ্কার। কিন্তু আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীরা ওই এলাকায় প্রচুর জায়গা-জমি কিনেছেন এবং ১৫০টির মতো কারখানা তৈরির ব্যবস্থা করে চলেছেন। এতে তাদের বিনিয়োগের ক্ষতি হতে পারেÑ সে কারণে তাদের পক্ষ থেকে চাপ রয়েছে। তাছাড়া ভারত কিভাবে বিষয়টিকে দেখছে- সেটাও তারা বোঝার চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে, বিএনপি রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে এখন সরে এলে তা রাজনৈতিক পরাজয় মনে হতে পারে, এ ধরনের কথাও একটা গোষ্ঠী উপরমহলকে বোঝানোর চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বলেন, রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যাপারে সরকার জনগণের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তিনি বলেন, সরকার যতো কঠোর অবস্থানেই থাকুন না কেন- তা দেশের জনগণ প্রতিহত করবে। রামপালের এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর থেকেই এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি। রামপালের ওই স্থানে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবন হুমকির মুখে পড়বে বলে যুক্তি দিয়ে প্রকল্প বাতিলের দাবি জানাচ্ছে তারা। এ আন্দোলনে জাতীয় কমিটির সঙ্গে রয়েছে দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর রামপাল প্রকল্প বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাতীয় কমিটি। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার আগ্রহের কথাও জানানো হয়েছে। এ আন্দোলনের অংশ হিসেবে জাতীয় কমিটি আগামী ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি দিয়েছে। ২৪ নভেম্বর আন্দোলনকারীরা সারাদেশ থেকে পদযাত্রা করে ২৬ নভেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশে অংশ নেবে। এর আগে অক্টোবরে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশ করবে জাতীয় কমিটি।
সরকারসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্র জানায়, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আর কোনো আলোচনায় সরকার যেতে চায় না। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রস্তুতি নিয়ে সরকার অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে সরকার সরে আসতে চায় না। এরপর বিএনপি এ প্রকল্প বাতিলের দাবি জানানোয় সরকার আরও কঠোর অবস্থানে চলে গেছে। সম্পাদনা: মোরশেদ