ফেসবুকে বাংলাদেশ…
এই পোড়া মানুষের ভার কে বহন করবে? আনু মুহাম্মদ
দুনিয়া ভেঙে পড়ার এই আর্তি, এই হাহাকার, এই পোড়া মানুষের ভার কে বহন করবে? নিমতলী, তাজরিন, রানা.. একই মডেল। কতজন মানুষ পুড়ে মরল আবারও। যারা বেঁচে কাতরাচ্ছে তাদের জীবন হবে দুর্বিষহ। প্রতিটি লাশের পরিবারের জন্য সরকার ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করে খালাস। জনগণের টাকা দিয়ে সরকারের এই ‘মহানুভবতা’ কেন? মালিক কই? এমপি সাহেবের কারখানায় এই মৃতের সারি তো কোনো দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকা-। জানা ছিল সমস্যা, সাপ্লাই ঠিক রাখার জন্য মেরামত করার সময় মেলেনি মালিকের। মুনাফা উঁচুতে রাখার অন্যতম উপায় খরচ কমানো। খরচ কমানোর অন্যতম উপায় মজুরি কম দেওয়া বা না দেওয়া, আর কারখানার মধ্যে কাজের পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার খরচ না করে টাকা বাঁচানো। মুনাফার প্রবাহ বাড়াতে জেনেশুনে তাই মানুষকে রাতভর কাজের পর খুনের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং খুনের মামলা হতে হবে, ক্ষতিপূরণও হতে হবে সেরকম। লেখক: অর্থনীতিবিদ
এরা সবসময়ই উন্নয়নবিরোধী, মোহাম্মদ এ আরাফাত
রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন, এদের মধ্যে বেশির ভাগ বিএনপি-জামায়াতি ভাবধারার মানুষ। যারাই অযৌক্তিক এবং কুৎসিত ভাষায় রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পটির সমালোচনা করেছে, আমি তাদের ঋধপবনড়ড়শ-এর ধিষষ-এ গিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি, এরা কারা? আমি যতগুলো ঋধপবনড়ড়শ ধিষষ ঘেঁটে দেখেছি তার বেশিরভাগ ঋধপবনড়ড়শ ধিষষ-এ হয় কোনো না কোনো যুদ্ধাপরাধীর প্রতি সহানুভূতির কথা লেখা আছে, অথবা বিএনপির পক্ষে প্রচারণা আছে।
তবে কিছু অনু-পরমানু বামাতিও আছে, যারা হয়তো জামায়াতি না কিন্তু এরা সবসময়ই উন্নয়ন বিরোধী এবং এদের রাজনৈতিক অবস্থা কখনও বাংলাদেশের পক্ষে আসেনি। এবং এরা অসত্য তথ্য তৈরি করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সিদ্ধহস্ত। আরও একটা ছোট্ট অংশ আছে, যারা বাংলাদেশের উন্নয়নের পক্ষে তবে বামাতি মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত। আমরা শীর্ঘ্রই এই সকল মিথ্যাচারের মুখোশ উম্মোচন করব। বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাবেই। জয় বাংলা।
লেখক: শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে…, সাহেদ আলম
ঢাকার রাস্তাঘাটে রক্তের বন্যা দেখার পরও যাদের একটুকু খারাপ লাগেনি, তাদের মনের পশুটা কুরবানি হয়নি। ঈদটাই বৃথা। সবুজ নগরের বাসিন্দারা এবার নিশ্চয়ই ভাববেন, কিভাবে রক্তটা দেয়ালের বাইরে না দিয়ে কুরবানি করা যায়। সবুজ ঢাকার মেয়রদ্বয় নিশ্চয়ই ভাববেন, বৃষ্টির মধ্যে কিভাবে কুরবানি দিলে, রক্তের বন্যা তৈরি হবে না। কোনো না কোনো ব্যবস্থা তো অবশ্যই আছে। ধর্মের যথেচ্ছ পালন নয়, নিয়মতান্ত্রিক এবং স্বাস্থ্যসম্মত পালন নিয়ে আমাদের-ই কথা বলতে হবে। আমরা যদি না জাগি মা কেমনে সকাল হবে… লেখক: প্রবাসী সাংবাদিক
সেলফি রোগ থেকে বের হন, শরিফুল হাসান
অনেকের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে কিন্তু বাস্তবতা হলো, গত ছয় বছর ধরে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করলেও আমি কখনো কোনোদিন সেলফি তুলিনি। প্রিয় আমিনুল ইসলাম ভাইয়ের মতো আমারও একই কথা, পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোতে অল্প বয়সি ছেলেমেয়েরা যখন রকেট বানাচ্ছে, মঙ্গল গ্রহে মানুষ পাঠাচ্ছে কিংবা নতুন নতুন মোবাইল বা অ্যাপস বানাচ্ছে, তখন আমাদের দেশের একদল ছেলেমেয়ে সারাক্ষণ শুধু সেলফি তুলছে। কেন রে ভাই, বাংলাদেশে কি আপনার বা আপনাদের ছবিটা তুলে দেওয়ার লোকের অভাব পড়ছে? আর সেলফি তোলা ছাড়া মোবাইলের আর কী কোনো ব্যবহার নেই? সাধারণ যে কারও চেয়ে আমি অনেক বেশি ইন্টারনেট বা ফেসবুক ব্যবহার করি। কিন্তু সেলফি তোলা বা দেয়ার বদলেÑ কার রক্ত লাগবে, কে কোন মানবিক সংকটে আছে, কে একটা ভালো লেখা লিখল সেটা পড়তেই আমার ভালো লাগে। আপনিও চাইলে মোবাইল ইন্টারনেটকে নানা ভালো কাজে লাগাতে পারেন। কিন্তু সেটা শুধু সেলফি হতে হবে কেন? তাও এক দুদিন নয়, দিনের পর দিন?
ভাইরে, দুনিয়ায় মেলা কিছু করার আছে। কিছু করতে না পারলে বই পড়েন। গান শোনেন। তাও ভালো না লাগলে আড্ডা দেন। গল্প করেন। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ান। অন্যের উপকার করার চেষ্টা করেন। আর একা থাকলে আকাশ, নদী, চাঁদ-সূর্য দেখেন। প্রকৃতি উপভোগ করেন। তাও সেলফি রোগ থেকে বের হন।
আজকের এই সময়টা শুধু নিজেকে নিয়ে থাকতে শেখায়, নিজেকে বিক্রির কৌশল শেখায়। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি, আপনার চোখটা যখন সেলফির বদলে পরের দিকে যাবে, আত্মকেন্দ্রিকতার বদলে যখন ভাবতে শিখবেন অপরকে নিয়ে, তখনি বদলাতে শুরু করবে রাষ্ট্র সমাজ। কাজেই নিজের ছবি দেখা বন্ধ করে এবার আশপাশে তাকান। বিষয়টা খুব সহজ। আবার কঠিনও। আসুন, পরকে ভালোবাসার সেই কঠিন কাজটিই শিখি আমরা। লেখক: সাংবাদিক