গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনপ্রতিনিধি এবং জনপ্রশাসনের সম্পর্ক
অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ, এমপি
১৯৭২ এর সংবিধানে রাজনৈতিক কর্মকা-ের কেন্দ্রবিন্দু চিহ্নিত করা হয় সংসদকে এবং সংসদীয় স্থায়ী কমিটি সৃষ্টির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহের প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব ন্যস্ত হয় এ সংসদের উপর।
বাংলাদেশে ১৯৭২ সালে গণতান্ত্রিক চর্চা শুরু হলেও তা ব্যহত হয় অল্পকিছুদিনের মধ্যেই। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা এবং তারপর সামরিক শাসন জারি এবং সংবিধানকে অকার্যকর করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক চর্চা ব্যহত শুরু হয়। সুদীর্ঘকাল ধরে সংবিধানকে অকার্যকর করে রাখার ফলে সাংবিধানিক চর্চা ব্যহত হয়। গণতন্ত্রমনা এ দেশের জনগণের দুর্বার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ১৯৯০ সালে পতন ঘটে স্বৈরাচার সরকারের। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নিরপেক্ষ সরকারের ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয় দ্বাদশ সংশোধন আইন এবং ১৯৯১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশে আবারও প্রতিষ্ঠিত হয় সংসদীয় গণতন্ত্র। জনগণের সঠিক ইচ্ছার প্রতিফলনই হচ্ছে সরকারি ও বিরোধী দলের ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফসল। গণতন্ত্রমনা বাংলাদেশের মানুষ ইতোপূর্বে ১৯৫৪ সালে ও ১৯৭০ সালের নির্বাচনেও গণতান্ত্রিক সরকারের পক্ষে রায় দিয়েছিল।
প্রশাসনিক ব্যবস্থা: মানব সভ্যতার প্রাচীনতম শাসন পদ্ধতির অন্যতম হলো আমলাতন্ত্র। সরকারের কর্মকা- পরিচালনার অন্যতম অঙ্গ হলো আমলাতন্ত্র। প্রাচীন এ পদ্ধতি সময়ের সঙ্গে পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান বিশ্বে সর্বত্রই প্রচলিত আছে। গধীবিনবৎ ঐুফৎধঁষরপ ংঃধঃব তার গবেষণায় উল্লেখ করেন, ডবষষ ড়ৎমধহরংবফ পবহঃৎধষরংবফ নঁৎবধঁপৎধপরবং বিষষ রহ ঢ়ষধপব রহ ধহপরবহঃ ওহফরধ ধহফ ঈযরহধ। রাজা অশোক এর আমলে সু-শৃঙ্খল কেন্দ্রীয় আমলাতন্ত্র ভারতে এবং মেন্ডারিনের আমলে চীনে পরিলক্ষিত হয়। সরকারের নীতি বাস্তবায়নে আমলাতন্ত্র প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকা-ে আমরা প্রশাসনের নিরবচ্ছিন্ন ভূমিকা দেখতে পাই। বাংলাদেশে যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা আমরা দেখতে পাই তা মূলত বৃটিশ উপনিবেশ আমলে এ দেশ শাসনে বৃটিশরা যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছিল তারই উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা। (চলবে)
লেখক : সাবেক ডেপুটি স্পিকার
সম্পাদনা : আশিক রহমান