রিকু আমির: একটি ডাস্টবিনের কারণে মহাখালীতে অবস্থিত জাতীয় বক্ষ্মব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডসহ আরও দুই ওয়ার্ডের রোগীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। এ হাসপাতালের বর্জ্যে পরিপূর্ণ ডাস্টবিনটি এসব ওয়ার্ডের খুবই কাছে।
সরেজমিন গতকাল শনিবার বিকালে দেখা গেছে, ৪০ শয্যার মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের দোতলা ভবনে ওয়ার্ড দুটি- ৯ এবং ১০। এর খুব কাছে ৭ ও ৮নং ওয়ার্ডের অবস্থানও। এসব ওয়ার্ডের পূর্ব পাশে অবস্থিত একটি সরু পথের দুপাশেই ফেলা হচ্ছে হাসপাতালের সব ধরনের বর্জ্য। সরু পথ হলেও এটিই একমাত্র চলাচলের পথ, যে পথের উপরই অনেক সময় বর্জ্যরে স্তূপ হয়ে যায় বলে জানান দোকানদার হেলাল। তার অস্থায়ী দোকানের খুব কাছেই এ ডাস্টবিন।
কুরবানি ঈদের পূর্বে মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডে রোগী দেখতে এসেছিলেন মহাখালীর বাসিন্দা ইব্রাহিম। শনিবার তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, রোগী দেখতে এসে এত দুর্গন্ধ নাকে লেগেছে, নাক চেপে ১০ মিনিটের মতো থাকতে পেরেছিলাম। খুব গুরুতর অবস্থা না হওয়ায় রোগীকে আমার বাসায় নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলাম। তার প্রশ্ন- সুস্থ মানুষের পক্ষেই এ দুর্গন্ধ হজম সম্ভব নয়, অসুস্থ মানুষ করবে কীভাবে?
শনিবার মুক্তিযোদ্ধা ওয়ার্ডের একজন রোগীর স্বজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে বলেন, এত দুর্গন্ধ! টেকাই যায় না। ভাবছি, অন্য হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাব। এ পরিবেশে থাকলে আমিও অসুস্থ হব, আর রোগীতো মারাই যাবে দেখছি! ৭নং ওয়ার্ডের একজন রোগীর স্বজনের নাম আকাশ, বাড়ি চাঁদপুর। তিনি জেদ করে বলেন, ডাক্তার ছুটি দিলে দিব, নাইলে নাই, যামুই গা, ঢাকা মেডিকেলে যামু। এই গন্ধে রোগী টিকবো কেমনে? সিস্টাররে কইছি, ডাক্তাররে কইছি, কেউ কিছু কয় না?
বিকালে এ প্রতিবেদকের উপস্থিতিতে হাসপাতালের বর্জ্য অপসারণকর্মী মানিক কাজ করছিলেন ডাস্টবিনে। তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। যদিও ডাস্টবিনের খুব কাছে নির্মাণাধীন ৩০০ শয্যার গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের জন্য তৈরি অস্থায়ী দোকানদার হেলাল এ প্রতিবেদককে বলেন, আগে এসব ময়লা ফেলা হতো এ জায়গায় (গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের জায়গায়)। এখানে বড় গর্ত ছিল। ভরাট করার পরই নতুন জায়গায় ময়লা ফেলা শুরু হয়।
বক্ষ্মব্যাধি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সাহেদুর রহমান খান এ প্রতিবেদককে বলেন, ময়লা নিয়মিত এখান থেকে নিয়ে মহাখালী বাসস্ট্যান্ড ঘেঁষা সিটি করপোরেশনের ডাস্টবিনে ফেলা হয়। রোগীদের সমস্যার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা হবে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম