যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি ইমাম হত্যায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ-
গাজী মিরান: ম্যানচেস্টারে বাংলাদেশি ইমাম জালাল উদ্দিনকে হত্যায় একজনকে যাবজ্জীবন কারাদ- দিয়েছে দেশটির একটি আদালত। দ-িত মোহাম্মেদ হোসেন সাঈদীর বিরুদ্ধে ইমামকে হত্যায় সহযোগিতার প্রমাণ মিলেছে। রোগ নিরাময় ও নানা সমস্যা সমাধানে তাবিজ দেওয়ায় ৭১ বছর বয়সী এই ইমামকে হত্যা করা হয় বলে আদালতের রায়ে উঠে এসেছে। হত্যাকা-ের পিছনে আইএসের আদর্শ কাজ করেছে বলে এতে বলা হয়। আদালতে বলা হয়, নামাজ আদায়ের পর মসজিদ থেকে এক বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত খেয়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে ওই ইমামের উপর হামলা হয়। প্রায় ১৫ বছর আগে বাংলাদেশ থেকে রচডেলে যাওয়া ইমাম জালাল উদ্দিন অসুস্থতা ও অশুভকে তাড়াতে ইসলামী পন্থায় তাবিজ দিয়ে ওই এলাকায় বেশ পরিচিত হয়ে উঠেন। বিবিসি
কিন্তু এই তাবিজ সংক্রান্ত বিষয়ের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করেই তার উপর হামলা হয় বলে জানানো হয় প্রসিকিউশনের ভাষ্যে। বলা হয় ২১ বছর বয়স্ক মোহাম্মদ হোসেন সাঈদী ও ২৪ বছরের আব্দুল কাদির তার উপর হামলা চালায়। হত্যাকা-ের কয়েক দিন পর যুক্তরাজ্য থেকে পালিয়ে তুরস্কে যান কাদির। পরে সেখান থেকে তিনি সিরিয়া যান বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের। দ-িত মোহাম্মদ সাঈদীর বিরুদ্ধে ইমামকে হত্যায় সহযোগিতার প্রমাণ মিলেছে এবং তাকে নূ্যূনতম ২৪ বছর সাজা ভোগ করতে হবে জানানো হয়।
নিহত জালাল উদ্দিনের পারিবারিক বন্ধু হারাস রফিক বিবিসি-কে বলেন, এই হত্যাকা- প্রমাণ করে যে যুক্তরাজ্য এবং পুরো পৃথিবী জুড়ে এ মুহূর্তে ইসলামের ভিতরেই যেন একটি যুদ্ধ শুরু হয়েছে। যারা আধ্যাত্মিক পন্থায় তাবিজের মাধ্যমে মানুষের রোগ সারায় তাদের একশ্রেণিী মানুষ অপছন্দ করতে শুরু করেছে। এদেরকে তারা প্রকৃত মুসলিম বলে মনে করছে না।
প্রসিকিউটর আদালতে বলেন, জালাল উদ্দিন রোগ সারাতে যে ইসলামি পন্থা চর্চা করতেন আইএস সেটাকে ‘ব্ল্যাক ম্যাজিক’ হিসেবে দেখে এবং তারা মনে করে, যারা এর চর্চা করে তাদের কঠিন শাস্তি, এমনকি মৃত্যু প্রাপ্য।
ঘটনার পর গোয়েন্দারা সাঈদীকে তার রচডেলের বাসা থেকে গ্রেফতারের পর তার মোবাইলে জালাল উদ্দিনের মৃত্যুর দৃশ্য পান। এ সময় তার বাসা থেকে আইএসের প্রচারের অনেক কিছু উদ্ধার করা হয়।
আদালতে উপস্থাপিত একটি ছবিতে জালালিয়া মসজিদের বাইরে আইএসের পতাকার মতো একটি পতাকা ধরে সাঈদীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। গত ফেব্রুয়ারির এক সন্ধ্যায় ম্যানচেস্টারের রচডেলের একটি শিশু পার্কে হামলার শিকার হন জালাল উদ্দিন। তার মাথা ও মুখে একাধিক জখমের চিহ্ন পাওয়া যায়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি