সাকিব ও হেলিকপ্টার দুর্ঘটনা কক্সবাজার জেলা প্রশাসক চিঠি দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: ইনানীর কাছে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কথা জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়েছেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন। শুক্রবারই তিনি চিঠি দেন। চিঠিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হেলিকপ্টার ভ্রমণ কিংবা কক্সবাজারে ভ্রমণ করার ব্যাপারে যাতে আগাম তথ্য পান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারেন তিনি সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ারও অনুরোধ জানিয়েছেন।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, সাকিব আল হাসান বিশ্বসেরা একজন ক্রিকেটার। তাকে নিয়ে এভাবে কোনো আগাম তথ্য না দিয়ে মেঘনা এভিয়েশন ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা যে কাজটি করেছেন এটা ঠিক করেননি। কারণ সাকিব আল হাসান অফিসিয়ালি কোনো ভিআইপি নন। কিন্তু তার মতো একজন মানুষকে নিরাপত্তা দেওয়া ও তার আসার আগাম খবর জেনে ব্যবস্থা নেওয়াটা আমাদের দায়িত্ব। তিনি আসছেন এটা আমাদের জানালে ও কক্সবাজার পুলিশ প্রশাসনকে জানালে সে হিসেবে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। কারণ এখানে নিরাপত্তার বিষয়টি একটি বড় ইস্যু। তাকে নামিয়ে দেওয়ার পর ফিরে যাওয়ার পথে হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এ দুর্ঘটনাটি যদি আগে হতো তাহলে আজকে কী অবস্থা হতো?
এদিকে তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর পর আমরা ঘটনা জানতে পারি। ঘটনা জানার পর আমাদের ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রিপোর্ট দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসকের কাছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার যে রিপোর্ট দিয়েছেন সেখানে দুর্ঘটনার কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়েছে নয়টা বিশ মিনিট।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেলা প্রশাসককে রিপোর্টে জানিয়েছেন, শুক্রবার ১৬ সেপ্টেম্বর সকাল নয়টা বিশ মিনিটের দিকে মেঘনা এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টার ইনানীর কাছে রেজুখাল পাড় হয়ে ব্রিজের কাছাকাছি ঝাউবনের কাছে বিধ্বস্ত হয়। এলাকাটি ইনানীর হোটেল সী পার্লের তিন কিলোমিটারের মধ্যে। এর আগে ওই হোটেলের কাছে সাকিব আল হাসানকে হেলিকপ্টার থেকে নামানো হয়। ফেরার পথে ওই হেলিকপ্টারে একজন পাইলট ছিলেন। যিনি উইং কমান্ডার শফিকুল ইসলাম। আর চারজন আরোহী ছিলেন। এরমধ্যে একজন একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থার কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। তিনি দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হন। আহত হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর তাকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এর বাইরে হেলিকপ্টারে ছিলেন আরও একজন। যার সঙ্গে আরও দুজন ছিল। তারা আঘাত পেয়েছেন। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তারা ঢাকায় চলে যান। আর পাইলটকে হাসাপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
আরও জানানো হয়, হেলিকপ্টারটি ল্যান্ড করা হয়েছিল হোটেল সী পার্লের রাস্তার পাশে।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিপোর্ট দেওয়ার পর আমি পুরো বিষয়টি জানিয়েছি মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে। আমরা সরকারিভাবে যারা আসেন তাদের বিষয়টি জানতে পারি। তাদের জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। কিন্তু বেসরকারি পর্যায়ে যারা আসেন তাদের ব্যাপারে আমাদের না জানানোর কারণে আমরা অনেক সময় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারি না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা জানতেও পারি না।