জনসম্পৃক্ত ইস্যুতে আন্দোলনে নামতে চায় বিএনপি দেশে ফিরে গণসংযোগে নামবেন খালেদা জিয়া
শাহানুজ্জামান টিটু: নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র ইস্যু, খালেদা জিয়াসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা, গুম, হত্যা, জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ, গ্যাস ও বিদ্যুৎসহ জনসম্পৃক্ত বেশকিছু ইস্যুতে এবার মাঠে নামার চিন্তা করছে বিএনপি।
গণসংযোগ, লংমার্চ, ঘেরাও, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধনের পাশাপাশি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলা সফরে নামবেন। তবে প্রথম দিকে হালকা ধরনের কিছু কর্মসূচি দিয়ে ধাপে ধাপে তা কঠোর করার চিন্তা নিয়ে এগুচ্ছে দলটির নীতিনির্ধারকরা। খালেদা জিয়া ২২ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার পর তার সঙ্গে আলাপ করে সিরিজ কর্মসূচি সাজানো হবে। কর্মসূচির বিষয়ে প্রাথমিক কিছু আলোচনা হয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যায়ে। দলটির সিনিয়র এক নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলের পর খালেদা জিয়া ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছে সৌদি আরবে। সেখানে দলের শীর্ষ দুই নেতার সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক বিষয়, দলের করণীয়সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগাম নির্বাচন ও তারেক রহমানের সাজা, সরকারের পরবর্তী টার্গেট দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মামলার বিষয়েও মা-ছেলের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। সরকার যেন আর কোনো নীলনকশা বাস্তবায়ন করে ক্ষমতায় থাকতে না পারে এজন্য আন্দোলন নিয়ে আমরা ভাবছি। আন্দোলন ছাড়া এ অবৈধ সরকারের কাছ থেকে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনÑ জনগণের এ দাবি আদায় করা সম্ভব নয়।
জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আন্দোলনের প্রকৃতি ও কৌশল এখন পরিবর্তন হচ্ছে। দ্রুত সংগঠনগুলোকে গুছিয়ে নিতে পারলেই আমরা গণসংযোগ বৃদ্ধি করব, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াও গণসংযোগে নামবেন। আমরা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করি, তাদের সঙ্গে নিয়েই আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামব। এর আগে আমরা বেশকিছু আন্দোলনও করেছি। এখন আমরা আবারও বিষয়টি নিয়ে কথা বলছি। এ ব্যাপারে যতটুকু সম্ভব আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার চেষ্টা করব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে চলছে। বিরোধী দলের শীর্ষ নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। এ রকম পরিস্থিতিতে গণতান্ত্রিক শক্তির লড়াই চালানো খুবই কঠিন কাজ। এখানে সামগ্রিক আগ্রাসন আছে। মিডিয়া দখল, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা যে ভাষায় কথা বলেন রাজনৈতিক নেতারাও ওই ভাষায় কথা বলেন না। বিচার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। এসব ঘটনা গণতান্ত্রিক কার্যক্রমকে রুদ্ধ করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ অবস্থায় রাজপথে বিএনপির কোনো কার্যক্রম দৃশ্যমান না হলেও ভিতরে দল গোছানোর কাজ চলছে। সব দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচনের দাবি আদায়ে আমরা যেটা করছি, আপনারা হয়ত রাজপথে দেখছেন না। আপাতত আমরা জনসংযোগ করছি, সংগঠনকে গোছানোর চেষ্টা করছি। দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করার চিন্তাভাবনা করছি। সম্পাদনা: হাসিবুল ফারুক চৌধুরী