খালেদা ও তারেক সৌদি আরব যাত্রায় এক ফ্লাইটের যাত্রী হতে পারলেন না
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন পরিবর্তন হচ্ছে। তিনি ২১ সেপ্টেম্বর দেশে ফেরার কথা থাকলেও খালেদা জিয়ার পরিবারের একজনের দেওয়া সর্বশেষ খবর অনুযায়ী তিনি ২২ কিংবা ২৩ সেপ্টেম্বর দেশে ফিরতে পারেন। কারণ তিনি চেয়েছিলেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে একই ফ্লাইটে যাত্রী হবেন। কিন্তু তা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে তিনি দু-একদিন বেশি থাকছেন। খালেদা জিয়ার পরিবারের একজন সদস্য বলেন, হজে যাওয়ার আগেও একই ফ্লাইটে যাওয়া নিয়ে অনেক ঝামেলা হয়েছে। এখন ফেরার সময়ও ঝামেলা হচ্ছে। এছাড়া তিনি সেখানে চিকিৎসাও নেবেন।
বেগম খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন তিনি এমিরেটসের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরবে যাবেন। আবার ফেরার সময়েও এমিরেটসের ফ্লাইটে ফিরবেন। এ সময়ে তার সঙ্গে তার পুত্র তারেক রহমান ও তার পরিবার এবং কোকোর পরিবার দুবাই বিমাবন্দর থেকে একসঙ্গে যোগ দেবেন। সেখান থেকে তারা কানেক্টিং ফ্লাইটে এক সঙ্গে সৌদি আরব যাবেন। কিন্তু তাকে সে সুযোগ দেওয়া হয়নি। তিনি সব সময় এমিরেটসের ফ্লাইটেই সৌদি আরব যান। সৌদি বাদশার রাজকীয় অতিথি হিসেবে তাকে ওই এয়ারলাইন্সে যাওয়ার জন্য ব্যবস্থা করা হয়। অন্যান্যবারের মতো তিনি এবারও তেমনটাই জানিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এমিরেটস খালেদা জিয়ার নামে ও তার সফরসঙ্গীদের নামে টিকিট ইস্যু করতে পারেনি। কারণ বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এমিরেটসকে জানায়, খালেদা জিয়ার নামে কোনো হজের টিকিট ইস্যু করা যাবে না। কারণ তিনি হজযাত্রী হিসেবে যাচ্ছেন। সৌদি এয়ারলাইন্স ও বিমান ছাড়া অন্য কোনো এয়ারলাইন্সে হজযাত্রীর টিকিট ইস্যু করা যাবে না। এমিরেটসের তরফ থেকে সরকারের ওই কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়, আমরা সবসময় তাকে পরিবহণ করি। এবারও তিনি আমাদের এয়ারলাইন্সে যেতে চাইছেন। আমরা তাকে নিতে চাই। এ জন্য সৌদি আরব থেকেও খালেদা জিয়ার জন্য এমিরেটসের টিকিটের জন্য চিঠি ইস্যু করা হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে বিষয়টি এমিরেটসের তরফ থেকে জানানো হয়। এরপর এমিরেটসের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করেও টিকিট ইস্যু করানো সম্ভব হয়নি। এমিরেটস এ ব্যাপারে দুঃখ প্রকাশ করে এবং তাদের সীমাবদ্ধতার কথা জানায়।
খালেদা জিয়ার ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, তিনি যদি সৌদি এয়ারলাইন্সে না যান তাহলে তার হজেই যাওয়া হবে না এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এ কারণে তিনি পরে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। সৌদি এয়ারলাইন্সে যান। আর তারেক রহমানকে তার পরিবার ও কোকোর পরিবারকে নিয়ে পরে সৌদি আরবে আসার জন্য জানান। এ কারণে তাদের পরে যেতে হয়।
সূত্র জানায়, সরকার নিয়ম করেছে হজযাত্রীদের হজে যেতে হলে অবশ্যই সৌদি এয়ারলাইন্স ও বিমানের একটিতে যেতে হবে। এর বাইরে যেতে পারবেন না।
সূত্র জানায়, ফেরার পথেও খালেদা জিয়া চেষ্টা করেছিলেন তারেক রহমান ও পরিবারের অন্যদের নিয়ে দুবাই পর্যন্ত একসঙ্গে আসবেন এমিরেটসের ফ্লাইটে। এরপর খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন আর তারেক রহমান সবাইকে নিয়ে লন্ডনে চলে যাবেন। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। এবারও খালেদা জিয়াকে সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে আসতে হচ্ছে। নাহলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে ঝামেলা হতে পারে।
সূত্র জানায়, সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে সৌদি আরবে হজ পালন শেষে বৃহস্পতিবার কিংবা শুক্রবার খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে পারেন। দু-একদিনের মধ্যে এটা চূড়ান্ত হবে। যেদিন আসবেন সিডিউল অনুযায়ী সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বিকাল ৫টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খানও একথা নিশ্চিত করেছেন। তবে তার দেশে ফেরার বিলম্ব হওয়া নিয়ে তিনি কোনো কারণ বলেননি।