১৭ ভারতীয় সেনা ও ৪ হামলাকারী নিহত কাশ্মীরে সেনা সদরে হামলা
এম রবিউল্লাহ ও মাছুম বিল্লাহ: ভারতের জম্মু কাশ্মীরে সেনা সদর দফতরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় ১৭ সেনা সদস্য ও চার হামলাকারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১০ জন সেনা সদস্য।
গতকাল রোববার ভোর ৫টার দিকে উত্তর কাশ্মীরের বারামুলার উরি সেক্টরের সেনা ব্রিগেডের সদর দফতরে এ হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় গুলি এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। জঙ্গিদের উপর পাল্টা হামলা চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনী। দুই পক্ষের মধ্যে এখনো গোলাগুলি চলছে বলে হিন্দি দৈনিক জাগরণ জানায়।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, চারজনের একটি হামলাকারী দল শ্রীনগর-মুজাফ্ফরাবাদে রাস্তার কাছে সেনা সদর দফতরে হামলা চালায়। তারা আত্মঘাতী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল বলেও ধারণা করা হচ্ছে। তবে হিন্দি দৈনিক জাগরণের খবরে বলা হয়, হামলাকারীর সংখ্যা কত এখনো তা জানা যায়নি।
ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়ান ইন্ডিয়া জানায়, ২০১৪ সালের পর জম্মু-কাশ্মীরের উত্তরাঞ্চলে এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা। হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং তার রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র সফর বাতিল করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারের কয়েকটি বার্তায় ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, ঘটনার দিকে নজর রাখা ওই অঞ্চলের রাজনৈতিক, সামরিক এবং প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।
এবিপি নিউজ জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে উরি শহরে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ঘিরে ফেলা হয়েছে পুরো শহর। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতেও কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। জঙ্গিরা রাতের অন্ধকারে সীমান্ত পেরিয়ে শহরে প্রবেশ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে বাহিনীর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে কীভাবে হামলাকারীরা সেনা সদর দফতরে হামলা চালিয়েছে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারা। এ ঘটনার পর দেশটির কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলোচনা করেছেন বলে হিন্দি দৈনিক জাগরণ জানায়।
প্রসঙ্গত, দুই বছর আগে উরি সেনা সদর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে মোহরা সেনা ছাউনিতে হামলা হয়েছিল।
গত ৮ জুলাই হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানি সেনাবাহিনীর গুলিতে নিহত হয়। তার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে কাশ্মীর উপত্যকা। নিরাপত্তা বাহিনী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মধ্যে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৭২ জন। আর আহত হয়েছে প্রায় ১১ হাজার নাগরিক। প্রায় আড়াই মাস জরুরি অবস্থা বলবৎ থাকে কাশ্মীর উপত্যকায়। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি