পারিবারিক সংকট সন্তানের অমনোযোগিতার জন্য দায়ী
জুলফিয়া ইসলাম
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটছে। এর পেছনে বহু কারণ থাকে। অশিক্ষিত পরিবারগুলোতেই বিবাহ বিচ্ছেদ বেশি ঘটে থাকে। সাধারণত দৈহিক নির্যাতন, ভরণপোষণের অক্ষমতা, পারিবারিক কলহ ইত্যাদি কারণে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে থাকে। আর শিক্ষিত পরিবারগুলোতে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে মতের অমিল, অবৈধ সম্পর্ক, মদ্যপান, তর্কাতর্কি, পরিবার পরিচালনায় কর্তৃত্ব ইত্যাদি কারণে। সাধারণত দেখা যায় সন্তান যখন ছোট থাকে তখনই বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এক্ষেত্রে সন্তানের উপর এর ব্যাপক প্রতিক্রিয়া প্রতিফলিত হয়। ছোট শিশু অপেক্ষা বড় সন্তানদের উপর এর প্রভাব পড়ে বেশি। এরা বন্ধু-বান্ধবদের ঠাট্টা ও মশকরার শিকার হয়ে পড়ে পরিবারের ভাঙনের ফলে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে সন্তানদের বিভিন্ন শখ আহ্লাদ বিসর্জন দিতে হয়।
কিছু কিছু পরিবারে বিভিন্ন রকম কোন্দল সন্তানদের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। পরিবারের পুরুষরা যদি মদ্যপান করে এবং তা মাত্রাতিরিক্ত হয় তবে সে নিজেকে সংযত রাখতে পারে না। আবার কিছু কিছু পরিবারে স্বামী বা স্ত্রীর অত্যাধিক মেজাজ প্রদর্শনের জন্য এরকম হয়ে থাকে। যে পরিবারে যতবেশি দ্বন্দ্ব সেই পরিবারের সন্তনেরা মানসিকভাবে সব সময় বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যে বাস করে। আবার তারা যখন বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করে তখন তারাও তাদের স্ত্রী কিংবা স্বামীর সঙ্গে ওই ধরনের আচরণ করে থাকবে।
পারিবারিক কোনো জটিল পরিস্থিতির সময় এরা সমঝোতামূলক আচরণ করতে পারে না। এ ব্যক্তিরা যখন বাবা কিংবা মায়ের ভূমিকায় থাকে, তখন তারা তাদের সন্তানদের উপর দৈহিক নির্যাতন করে থাকে, তাদের নিকট থেকে সবসময় অযৌক্তিক দাবি করে থাকে। মা-বাবার অশান্তি প্রকাশের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকে সন্তানেরা। মনে রাখতে হবে, দৈহিক নির্যাতন সন্তানের মনে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে। পরিবারের বাধা ধরা নিয়ম কানুন মানতে চায় না। তাদের মন তখন অবিশ্বাসী এবং অনির্ভরযোগ্য হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে স্কুলের পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না। সর্বক্ষেত্রে অমনোযোগী হয়ে পড়ে।
লেখক: কথাসাহ্যিতিক / সম্পাদনা: আশিক রহমান